সৌরভ মাহমুদ হারুন :–
কুমিল্লা সদর উপজেলার উত্তর মাঝিগাছা গ্রামে পারিবাবিক কলহের জের ধরে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী খোদেজা আক্তার (২৮) কে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে স্বামী বাবুল মিয়া (৩৫)। শুক্রবার সকাল ৭ টায় এ লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে। পরে এলাকাবাসী ঘাতক স্বামী বাবুল মিয়াকে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করে। নিহত খাদিজা ২ সন্তানের জননী ও ৯ মাসের অন্ত:সত্ত্বা ছিল। আগামী ৫ অক্টোবর চিকিৎসক তার গর্ভের সন্তান প্রসবের দিন নির্ধারন করে ছিল।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০০৪ সালে সদর দক্ষিণ উপজেলার সামবকসী এলাকার মৃত আবু মিয়ার কন্যা খোদেজা আক্তার (২৮) এর সাথে সদর উপজেলার উত্তর মাঝিগাছা গ্রামের মৃত আলী মিয়ার ছেলে রাজমিস্ত্রি বাবুল মিয়ার সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান জন্ম হয়। বর্তমানে ছেলে রিফাত তৃতীয় শ্রেনী ও মেয়ে নিপা নার্সারীতে পড়াশোনা করে। এছাড়াও খাদিজা ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল।
ঘটনার দিন শুক্রবার ভোরে ফজর নামায আদায় করে গৃহস্থলীর কাজে ব্যস্ত হয়ে পরে খাদিজা। ঘুম থেকে উঠে স্বামী বাবুল মিয়া তার স্ত্রী খাদিজার কাছে টাকা চায়। গত কোরবানীর ঈদের আগে একটি সমিতির মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা ঋন নেয় খাদিজা। ঈদে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। বাকী ২০ হাজার টাকা সন্তান প্রসবকালীন সময়ে খরচের জন্য রেখে দেয় খাদিজা। স্বামী বাবুল মিয়া ওই টাকা দেয়ার জন্য চাপ দিলে খাদিজা জানায় তার প্রসব ও প্রসব পরবর্তী খরচের জন্য এই টাকা দরকার। খাদিজা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে স্বামী বাবুল মিয়া উত্তেজিত হয়ে ধারালো ছুরি হাতে নিয়ে খাদিজার দিকে তেড়ে আসে। প্রান ভয়ে খাদিজা গোয়াল ঘরে আশ্রয় নেয়। এমন সময় ঘাতক স্বামী বাবুল মিয়া বলে তোরে এখনি ডেলিভারি করামু বলেই খাদিজার তল পেটে উপর্যুপরি ছুরি দিয়ে কোপাতে থাকে। এতে ঘটনাস্থলেই খাদিজার মৃত্যু হয়। ধারালো ছুরির আঘাতে খাদিজার গর্ভে প্রসবের অপেক্ষায় থাকা সন্তানটিও ক্ষতবিক্ষত হয়ে মারা যায় পরে এলাকাবাসী ঘাতক স্বামী বাবুল মিয়াকে ধরে পুলিশে সোর্পদ করে।
সদর উপজেলার ছত্তরখিল ফাড়ির এস আই আনিসুর রহমান জানান, ঘাতক বাবুল মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছি। নিহত খাদিজার লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। ।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহত খাদিজার ছোট ভাই জাকির হোসেন বাদি হয়ে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।