আকবর হোসেন, মনোহরগঞ্জ প্রতিনিধি:–
গত এক দশক ধরে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসের এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার, ভূমি) পদটি শূন্য রয়েছে। এতে উপজেলার কৃষকসহ সাধারণ মানুষ তাদের জায়গা জমি সংক্রান্ত জটিলতায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে খাস জমি, হালট, গোপাট, নদী, খাল, জলাশয়সহ কোটি কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি মহোৎসবে জবর দখল হয়ে যাচ্ছে। এতে ভূমি সেক্টরে নৈরাজ্যকর অবস্থা চলছে। অন্যদিকে ভুমি অফিসগুলো টাকা ছাড়া কোন কাজই করেন না। ২০০৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর নবগঠিত মনোহরগঞ্জ উপজেলার গেজেট প্রকাশিত হয়। ২০০৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়। উপজেলার প্রথম এসিল্যান্ড হিসেবে মনির হোসেন চৌধুরী ২০০৬ সালের ৬ এপ্রিল যোগদান করেন। মাত্র ৮ মাস কাজ করার পর একই বছরের ২৩ নভেম্বর তিনি বদলী হয়ে চলে যান। তারপর থেকে এসিল্যান্ড পদটি শূন্য রয়েছে। এসিল্যান্ডের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। কিন্তু তিনি বিভাগীয় সব কাজ শেষ করে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনে হিমসিম খাচ্ছেন। কারণ তার কার্যালয়ে অনেক কর্মচারীর পদ শূন্য রয়েছে। তার উপর আবার গত ১০ বছরেও উপজেলাটি পূর্ণতা পায়নি। এদিকে এসিল্যান্ড পদটি শূন্য থাকার কারণে কৃষকরা জমি খারিজ, নামজারি, ভিপি সম্পত্তি অবমুক্তি সহ ভূমি সংক্রান্ত সব ধরণের অভাব অভিযোগ নিষ্পত্তিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে এসিল্যান্ড না থাকায় অবাধ সুযোগ নিচ্ছে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ। তারা নানাভাবে সাধারণ মানুষকে হয়রানি নাজেহাল করছে। বিভিন্ন কাজে টাকা নিয়েও মানুষকে প্রত্যাশিত সেবা দিচ্ছে না। তাদের বিরুদ্ধে শত শত অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তার উপর এক শ্রেণির ভূমি দস্যূ ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে গোপনভাবে সরকারি সম্পত্তি জবর দখলের মহোৎসবে মেতে উঠেছে। তারা নদী, খাল, হালট, গোপাট, জলাশয়সহ খাস জমি দখল করে নিচ্ছে অবাধে। চাপের মুখে দায়সারা গোছের নোটিশ দিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছেন এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী। ফলে তাদের বিরুদ্ধে দিন দিন জনগণের অসন্তোষ বাড়ছে। সাধারণ মানুষ জানান, টাকা ছাড়া ভূমি অফিসে কোন কাজই হয় না। পড়চা, খতিয়ান, নামজারি, খারিজ খতিয়ান, খাজনা-দাখিলা নিতে নির্ধারিত হারে টাকা দিতে হয়। অনেকে জানান, টাকা দিলে ভূমি অফিসের সব কিছু পাওয়া যায়। টাকা না দিলে কোন কিছুই মিলে না। টাকার বিনিময়ে একই সম্পত্তি একাধিক মালিকের নামে একাধিক বার খারিজ খতিয়ান ভূক্ত করেন।
