২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত আতিকের পরিবারের একমাত্র দাবী হত্যার বিচার

শামসুজ্জামান ডলার :–
২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহত চাঁদপুরের মতলব উত্তরের আওয়ামীলীগ কর্মী আতিক উল্যাহ সরকার। ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহত আতিক উল্যাহ’র পরিবারকে ১০লক্ষ টাকা দেন। বর্তমানে আতিক পরিবারের আর্থিক অভাব তেমন নেই বললেই চলে। আতিকের পরিবারের এখন একমাত্র দাবী এ হত্যার বিচার দেখতে চান। গ্রেনেড হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের আশা করছেন বর্তমান সরকারের কাছে।
দারিদ্রতার মধ্য দিয়ে ৪ সন্তানকে লেখা পড়া চালিয়ে যেতে হয়েছে। সরকার সদয় হয়েছেন, তাই তাদের সংসারে তেমন কোন অভান না থকেলেও গৃহকর্তার অভাব তাদের। মা তার ছেলে, স্ত্রী তার স্বামী ও সন্তানরা তাদের বাবাকে না পাওয়ার এ ব্যথা কি পূরনীয় ? নিহত আতিকউল্যার স্ত্রী লাইলী বেগম সন্তানদের নিয়ে দোচালা ঘরে স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে গুমড়ে গুমড়ে কেঁদেছে। তার বড় মেয়ে তানিয়া আক্তার ছেংগারচর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে দ্বাদশ শ্রেণীতে, মিথুন সরকার একাদ্বশ শ্রেণীতে, মিন্টু সরকার ৮ম শ্রেণীতে এবং সাকিব সরকার ৭ম শ্রেনীতে পাঁচানী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ছে।
আগস্ট মাস আসলে সাংবাদিকরা খোঁজখবর নিতে গেলেই আতিকের স্ত্রী লাইলী বেগম ক্ষেপে গেলেও এবছর তিনি সাংবাদিকদের কাছে স্বামী হত্যার বিচার চেয়েছে। তিনি সাংবাদিকদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে, তিনি বলেন- আপনারা লেখালেখি করায় সরকার এতিম বাচ্চাদের দিকে নজর দিয়েছে। তারা এখন ঠিক মতো লেখা পড়া করতে পারছে। তাদের লেখা পড়া শেষ হলে সরকার তাদের চাকুরীর ব্যবস্থা করে দিলে নিহত আতিক সরকারের আত্মা শান্তি পাবে।
লাইলী বেগম আরো বলেন, স্বামীর মরণের পর শেখ হাসিনা ১লাখ টাকা দিছিল আর গত ২০১৩ সালে শেখ হাসিনা ১০ লাখ টাকা দিছে। হেই টাকা ব্যাংকে রাইখা মাসে যা পাই, তা দিয়াই চলতাছি।
শাড়ির আঁচল দিয়ে বারবার অশ্র“শিক্ত নয়ন মুছতে মুছতে সংবাদিকদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ তার ক্ষোভের কথাই বললেন স্বামী হারা লাইলী বেগম। আবারও ঘুরে এলো ২১ আগস্ট, সেই বিভীষিকাময় দিনটি। তাই তো দিনটি এলেই পিতৃহারা ৪ সন্তানকে সেই ভয়াল দিনের প্রকাশিত পত্রিকার সংরক্ষতি ছবি দেখিয়ে লোমহর্ষক হত্যার কথা বর্ণনা করেন লাইলী বেগম। বর্তমান সরকারের কাছে তার এখন একটাই মিনতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমগো অনেক দিছে, আমরা তাঁর দায় দিতে পাড়তাম না। তাঁর কাছে অহন একটাই দাবী যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আতিক হত্যার বিচার দেখতে চাই।
মতলব উত্তর উপজেলার ৭নং মোহনপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের উত্তর পাঁচানী গ্রামের ছেলে এই আতিক উল্যাহ। পেশায় ছিলেন দিনমজুর, ঢাকায় ঢালাই শ্রমিকের কাজ করতেন। স্ত্রী লাইলী বেগম তানিয়া, মিথুন, মিন্টু ও সাকিব এই ৪ সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকতেন। এক মেয়ে তিন ছেলের সংসারে লাইলী বেগম ছাড়া পরিবারের উপার্জনক্ষম কেউ ছিল না। ছিলনা কোন সহায় স¤পত্তি, একটা দোচালা ঘরই ছিল তাদের সম্বল।
মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনজুর আহমদ মঞ্জু বলেন, ২১আগষ্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত আতিক উল্যাহ সরকারসহ ঐ দিনের ঘটনায় সকল নিহতদের স্বরণে দোয়ার আয়োজনসহ ব্যাপক কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রমের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পরিবারের দৈন্যদশা লাঘবে ১০লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা করেছে। আগামীতেও আমাদের পক্ষ থেকে এ পরিবারের প্রতি সুদৃষ্টি থাকবে।

Check Also

করোনাযুদ্ধে প্রথম জীবন উৎসর্গকারী কনস্টেবল জসিমকে বুড়িচংয়ে সমাহিত

বুড়িচং প্রতিনিধিঃ করোনাযুদ্ধে পুলিশে প্রথম জীবন উৎসর্গকারী কনস্টেবল জসিম উদ্দিনকে (৩৯) কুমিল্লায় সমাহিত করা হয়েছে। ...