মনোহরগঞ্জ প্রতিনিধি:–
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের নরপাইয়া গ্রামের মৃত ইউনুছ মিয়ার পুত্র বেল্লাল হোসেন ও আবুল বাশারের ক্রয়কৃত সম্পত্তি জালিয়াতির মাধ্যমে জমা খারিজ বাতিল করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তারা গত ৫ আগষ্ট নামজারি জমা খারিজ মোকদ্দমা নং- ১৫১৩/২০১৪-১৫ এবং ১৬২৩/২০১৪-১৫ বাতিলের আদেশ রহিত করনের আবেদন জানিয়ে লিখিতভাবে মনোহরগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর জানান। কিন্তু এ ব্যাপারে ভুমি অফিস থেকে কোন নোটিশ বা কোন প্রকার শুনানী গ্রহন না করায় ফের তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর গত ১৬ আগষ্ট আরেকটি আবেদন করেছেন। জানা যায়, বেল্লাল ও আবুল বাশার গত ২২/০১/২০০৩ ইং সনের রেজিষ্ট্রিকৃত ১৪২৭ নং দলিলের মাধ্যমে তাদের ভাই নরপাইয়া গ্রামের মৃত ইউনুছ মিয়ার পুত্র রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে ১৮ শতক জমিন খরিদ করে মালিক ও দখলদার নিযুক্ত হয়। কিন্তু বেল্লাল ও আবুল বাশারের ভাই রফিকুল ইসলাম গত ১০/১২/২০০৯ ইং সনের রেজিষ্ট্রিকৃত ১৬৯০৩ নং বন্টন নামা দলিলে উক্ত নামজারি মোকদ্দমা দ্বয়ের সম্পত্তি অর্ন্তভূক্ত করেন। সে মোতাবেক রফিকুল ইসলামের মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশ এমরান হোসেন (কয়েস) বন্টননামা দলিল দেখিয়ে বেল্লাল ও আবুল বাশারের নামীয় নামজারি জমা খারিজ মোকদ্দমা নং ১৫১৩/২০১৪-১৫ এবং ১৬২৩/২০১৪-১৫ বাতিলের আবেদন করেন। সে প্রেক্ষিতে সহকারি কমিশনার (ভূমি) কর্তৃক উক্ত মোকদ্দমা ০২ টি বাতিল করা হয়। বেল্লাল হোসেন ও আবুল বাশার তাদের লিখিত আবেদনে উল্লেখ করেন, এ ব্যাপারে তারা ভূমি অফিস কার্যালয় থেকে কোন প্রকার নোটিশ পায়নি। তাছাড়া যে বন্টননামা দলিল দাখিল করা হয়েছে তাতে রফিকুল ইসলাম এবং তাদের পিতা মৃত ইউনুছ মিয়া এর সম্পত্তি বন্টন করেছে। নামজারি জমা খারিজ মোকদ্দমাদ্বয়ের উল্লেখিত দাগে সম্পত্তি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। ঐ সম্পত্তি রফিকুল ইসলাম খরিদ করে মালিক থাকাবস্থায় তারা দরখাস্তকারী দুই জনের কাছে বিক্রি করেছেন। বর্তমানে রফিকুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করায় তাহার ওয়ারিশ এমরান হোসেন (কয়েস) ভূমি অফিসের কানুনগো আমির হোসেন এবং ভূমি অফিসের অফিস সহকারী সফিকুর রহমানের সহায়তায় তহশিলদার ফজলুর রহমানকে বাধ্য করে তাদের কোন প্রকার নোটিশ না দিয়ে এবং কোন প্রকার শুনানী গ্রহণ না করেই তাদের নামীয় নামজারি জমা খারিজ মোকদ্দমা ০২টি বাতিল করেন বিদায় বেল্লাল ও বাশারের দলিলপত্রাদি যাচাইক্রমে নামজারি জমা খারিজ মোকদ্দমা নং- ১৫১৩/২০১৪-১৫ এবং ১৬২৩/২০১৪-১৫ বাতিলের আদেশ রহিত করনের জন্য এ আবেদনটি করেন। তারা নির্বাহী অফিসারের কাছে দেওয়া আবেদনে জানান, গত ৫ আগষ্ট তারিখে সহকারী কমিশনার ভুমি মনোহরগঞ্জ এর বরাবর যে অভিযোগটি দাখিল করা হয়েছে বর্তমানে সে অভিযোগ পত্রটি উপজেলা ভুমি অফিসে নাই বলে অফিসের কর্মরত লোকজন তাদেরকে জানান। যেহেতু অভিযোগের সাথে কানুনগো ও তহশিলদার এবং অফিস সহকারী শফিকুর রহমান জড়িত আছেন, সেহেতু তাদের কোনো একজন অভিযোগখানা লুকিয়ে রাখতে পারে। তাই আবুল বাশার ও বেল্লাল হোসেন ফের উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আরেকটি অভিযোগ দায়ের করেন। সম্পত্তির তফসিল হলো- জেলা- কুমিল্লা, উপজেলা- (লাকসাম) মনোহরগঞ্জ, মৌজা- সাবেক ৩৮৫ নং হালে ৩৯৯ নং নরপাইয়া, খতিয়ান নং- সাবেক সি.এস ৫০ নং, আর.এস ৫২ নং, বি.এস.ডি.পি ১০২ নং খতিয়ান ভূক্ত। দাগ নাম্বার- সাবেক ৩৮১ ও ৩৮২ দাগ হালে বি.এস ৪২৬ দাগ নাল ১ ষোল আনায় ২৬ শতক আন্দরে মোঃ ১৮ শতক। মোয়াজি আঠার শতক ভূমি মাত্র। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাওতলা ভূমি অফিসের তহসিলদার ফজলুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি জানান, তাকে জোর পূর্বক বাধ্য করা হয়েছে এই নামজারি জমা খারিজ বাতিল করতে স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য। মনোহরগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) না থাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান পান্নার কাছে জানতে চাইলে তিনি আবেদনটি পেয়েছেন বলে জানান।
