মুরাদনগর প্রতিনিধি
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের গুঞ্জুর গ্রামে এতিমখানা কর্তৃপক্ষের অত্যাচার-নির্যাতন সইতে না পেরে সোহাগ মিয়া (১২) নামে এক ছাত্র আত্মহত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা করলেও বিষয়টি পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় ময়না তদন্তের জন্য লাশ থানায় নিয়ে আসে। এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার লোকজন ঘটনাটির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য পুলিশ প্রশাসনের নিকট দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, ওই গ্রামের মুদি দোকানদার মোহর আলীর ছেলে সোহাগ মিয়া গুঞ্জুর দক্ষিণপাড়া শিশু সদনে লেখাপড়া করতো। ওই শিশু সদনের বিভিন্ন প্রকার দূর্নীতি, অনিয়ম, অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে কমিটির সভাপতি হাজী দেলোয়ার হোসেন জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে অভিযোগ করেন। ওই কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ফরিদ উদ্দিন সম্প্রতি তদন্তে এসে সোহাগ মিয়াকে তার পিতা কি করে জানতে চাইলে সে মুদি দোকানদারী করে বলে জানায়। জীবিত বাবাকে মৃত না বলায় শিশু সদনের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ও হাফেজ দেলোয়ার হোসেন ছাত্র সোহাগ মিয়ার উপর ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠে এবং ওইদিন থেকেই তার উপর অত্যাচার-নির্যাতন শুরু হয়। নির্যাতনের মাত্রা সইতে না পেরে মঙ্গলবার বিকেলে বাড়ি গিয়ে সোহাগ মিয়া বুধবার সকাল অনুমান ৯টায় ঘরের ভিতরে তীরের সাথে সুতলী পেচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ওই শিশুসদন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে পুলিশকে না জানিয়েই ঘটনাটি রফাদফা করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায়। পরে এলাকার অপর একটি মহল বাঁধ সাধলে বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে নিহতের ভাই ফয়সাল আহম্মেদ বাদী হয়ে বুধবার দুপুরে মুরাদনগর থানায় অপমৃত্যুর একটি মামলা করেন।
ঘটনাটির বিষয়ে এতিমখানার পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ও হাফেজ দেলোয়ার হোসেন ঘটনাটি অস্বীকার করে জানান, একটি মহল পরিকল্পিত ভাবে আমাদেরকে ফাঁসানোর জন্য গভীর ষড়যন্ত্র করছে। মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান জানান, অপমৃত্যুর সংবাদ পেয়ে এসআই মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে একদল পুলিশ পাঠিায়ে লাশ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ময়না তদন্ত শেষে দাফনের জন্য পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। অন্য কিছুর বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
