লাকসামে বন্যায় আশ্রয় নেয়া কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমান ত্রানসামগ্রী না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন

শাহ. মো. নুরুল আলম :—
টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি, জলাবদ্ধতার কারনে পৌরশহরের প্রায় ১ হাজার ২’শ পরিবার পানি বন্দিতে শিকার হয়েছে। ওদের কারো কারো বাড়ীঘর পানিতে ডুবে গেছে। এমনকি গরু,ছাগল, হাস, মুরগি, মৎস্য, কৃষিজমিসহ প্রায় কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিম্নমানের আয়ের মানুষগুলো জীবন যুদ্ধে, লজ্জাকে পিছনে ফেলে দিয়ে শুধুমাত্র বাঁচার জন্য পৌরসভার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রগুলো তাদের জন্য কোন রকম মাথা গোছার ঠাই হয়েছে।
সরেজমিনে জানা যায়, পৌরসভার ৯টি আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে প্রায় ৪’শ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। যাদের বাড়ীঘরে পানি উঠেছে। সূত্র মতে গত ২৫ জুলাই এ পরিবারগুলো বিভিন্ন কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়। বন্যা দূর্গত এলাকার জন্য সরকারী ভাবে ত্রান ও দূযোর্গ মন্ত্রনালয় ৫০ মেঃ টন চাউল ও ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বন্যা দূর্গত এলাকায় বরাদ্দকৃত অর্থ বিতরন করা হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় সংসদ সদস্য মোঃ তাজুল ইসলাম এমপির ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান এড. ইউনুছ ভূঁইয়াসহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ বন্যা দূর্গত এলাকায় ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেছে। এছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন সমূহ ও লাকসাম পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ত্রান সামগ্রী বিতরন করেছে। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত কোন এনজিও এমনকি কোন মানবিকার সংস্থা বনার্তদের সাহার্য্যে এগিয়ে আসেনি।
সরেজমিনে শুক্রবার লাকসাম পাবলিক হল আশ্রয় কেন্দ্রে এবং লাকসাম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলো ত্রানের জন্য অপেক্ষমান। গাড়ীর শব্দ পেয়ে এগিয়ে আসেন আশ্রয় নেয়া মমতাজ বেগম। তিনি প্রতিবেদকে বলেন গত ২৫ জুলাই আমার ২ সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে পাবলিক হলে উঠি আজ ১৩ দিন। শুধুমাত্র সরকারী ত্রান ২ দিন পেয়েছি। সব মিলিয়ে মাত্র ৪ দিন পেয়েছি। আমরা গরীব মানুষ বাড়ীতে পানি উঠার কারনে রান্না বান্না করতে পারি না, আমার স্বামী দিন এনে দিন খায়। পানি ও জলাবদ্ধতার কারনে মাঠে কাজ করতে পারে না। এদিকে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমান বিশুদ্ধ পানির অভাব, অধিকাংশ মানুষের চর্ম, এলার্জী, শর্দি, কাশি, জ্বর ও শিশুদের ডায়েরিয়া লক্ষন দেখা দিয়েছে। তাদের মতে প্রথমদিন ২টি ওরস্যালাইন বিতরণ করে একটি সংগঠন কিন্তু অদ্যাবধি পর্যন্ত সরকারী ভাবে কোন এমবিবিএস ডাক্তার এমনকি কোন স্বাস্থ্যসেবা মাঠ কর্মীদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে দেখা যায়নি। খুব দ্রুত বন্যায় কবলিত আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া হতদরিদ্র মানুষগুলোকে সময় মতো সু-চিকিৎসা না দিতে পারলে যে কোন মূহূর্তে মানুষ গুলো মৃত্যুর মুখে ঢুলে পড়তে পারে বলে মনে করেন অভিজ্ঞ মহল।

Check Also

দাউদকান্দিতে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু

হোসাইন মোহাম্মদ দিদার :কুমিল্লার দাউদকান্দিতে শান্তা বেগম (২৪) নামে এক গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ...