মো. আলী আশরাফ খান :–
শোকের মাস ২ আগস্ট রোববার সাড়ে এগারোটায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তালতলিতে অটোরিক্সা সিএনজি চালক ও মালিকগণ ‘মহাসড়কে সিএনজি চলতে পারবে না’, সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ করে।
তাদের এই কার্মকান্ডের ফলে এ সময় মহাসড়কে উভয় দিক যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় মেঘনা সেতুর পূর্ব পাশ থেকে দাউদকান্দি হয়ে চান্দিনা উপজেলার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ৪৫ কি.মি. সড়কজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়, এতে চরম বিপাকে পড়ে দু’পাশের যাত্রীরা। সরকারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে মহাসড়কে অটোরিক্সা সিএনজি চলাচলে বাঁধা না দেওয়ার দাবিতে চালক ও মালিকগণ এ মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচী পালন করে।
অটোরিক্সা সিএনজি চালকরা জানান, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ অবরোধের খবর পেয়ে দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জুবায়দুল আলম চালক ও মালিকদের সাথে কথা বলেন। তিনি আমাদেরকে সরকারের এই আইনের ব্যাপারেও ধারণা দেন। এক পর্যায়ে আমরা মহাসড়ক থেকে অবরোধ সরিয়ে নেওয়ার সময় হঠাৎ করে দাউদকান্দি মডেল থানার এস.আই তপন কুমার বাগচী, এ.এস.আই দোলোয়ার হোসেন, মালিক ও চালকদের উপর বেপরোয়া লাঠিচার্জ শুরু করেন। এতে চালক ও মালিকগণ উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশও শর্টগানের গুলি ছুঁড়েন। পুলিশের গুলিতে চালক, বাসযাত্রী, শিক্ষার্থী, পথচারীসহ প্রায় ৩০/৩৫ জন আহত হয়। এসময় সিএনজি চালকেদের ইটপাটকেল নিক্ষেপে এ.এস.আই কবিরসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। পুলিশের গুলি নিক্ষেপের পর সিএনজি অটোরিক্সা চালক ও মালিকগণ মহাসড়কে যানজটে আটকা পড়া বেশ কিছু যানবাহন ভাংচুর করে। এতে বহু যাত্রী ও কয়েকজন চালক আহত হয়। সিএনজি মালিক ও চালকদের আন্দোলনের মুখে পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে পাশ্ববর্তি থানাগুলো থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে স্থানীয় প্রশাসন। দাউদকান্দি মডেল থানার এস.আই তপন কুমার বাগচী ও এ.এস.আই দোলোয়ার হোসেনকে প্রত্যাহারের দাবিতে পুনরায় মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করে তারা। সিএনজি অটোরিক্সা চালকরা অভিযোগ করেন, ‘সদ্য যোগদান করা দাউদকান্দি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) ফরিদ আহমেদ আমাদেরকে বাজে গালাগালি ও অশোভনীয় আচরণ করলে চালকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। একটানা ৩ ঘন্টা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকার পর দুপুর ১টায় দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী সুমন ঘটনাস্থলে এসে কুমিল্লা পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলেন। তিনি অভিযুক্ত এস.আই তপন কুমার বাগচীকে প্রত্যাহার ও এ.এস.আই দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় বিক্ষোভকারীরা।
