মো. জাকির হোসেন :–
যৌতুকের টাকার জন্য স্বামী এবং শ্বশুড় বাড়ির লোকজন গলায় তার পেচিয়ে ও বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেছে মেডিকেল কলেজ পড়ুয়া এক গৃহবধুকে। এঘটনায় শ্বশুড়কে আটক করেছে পুলিশ। স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা পলাতক রয়েছে। নিহতের পিতা বাদী হয়ে আটককৃত শ্বশুরসহ ৬ জনকে আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল গ্রামে। মামলার এজাহার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শশীদল গ্রামের ডাঃ আবদুল খালেকের মেয়ে কুমিল্লা ইষ্টার্ন মেডিকেল কলেজের ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী উম্মে আয়মন সুলতানা স্বর্ণা(২৪) এর সাথে গত ১ বছর পূর্বে একই গ্রামের নূরুল ইসলাম(নান্নু মিয়া) এর ছেলে জামিল হোসেন ইমনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দেবার জন্য স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজন প্রায়ই তাকে মানসিক ও শারীরীক ভাবে নির্যাতন করত। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজন যৌতুকের টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায় স্ত্রী স্বর্ণাকে মোবাইল চার্জারের তার গলায় পেচিয়ে এবং নাকে-মুখে বালিশ চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে তাকে বিছানায় ফেলে রেখে স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। এসময় এলাকাবাসী তার শ্বশুর নান্নু মিয়াকে পালিয়ে যাবার সময় আটক করে। খবর পেয়ে স্বর্ণার বাবা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশে খবর দিলে থানার এসআই ফরহাদ হোসেন ও সঙ্গীয় ফোর্স রাতে লাশ উদ্ধার করে আটককৃত শ্বশুড়সহ থানায় নিয়ে আসে। স্বর্ণার পিতা অভিযোগ করে বলেন, যৌতুকের ৫ লক্ষ টাকার জন্য তার মেয়েকে তার মেয়ের জামাতা ইমনসহ তার বাড়ির লোকজন মোবাইল ফোনের চার্জারের তার গলায় পেচিয়ে এবং বালিশ নাকে-মুখে চাপা দিয়ে হত্যা করেছে। থানার এসআই ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, লাশের প্রাথমিক তদন্তে গলায় দুটি দাগ পাওয়া গেছে। ধারনা করা হচ্ছে তার গলায় তার পেচিয়ে অথবা বালিশ চাপা দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্বামী ইমনকে প্রধান আসামী করে তার বাবা, দুই ভাই জাকির হোসেন সুমন ও জাহিদ হোসেন সুজন, দুই ভাবী ফাতেমা বেগম ও তানিয়া আক্তারসহ মোট ৬ জনকে আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত ঘাতক স্বামী ইমন নিহত স্বর্ণার বাবা ও তার পরিবারের সদস্যদের মামলা না করার জন্য মোবাইল ফোনে হুমকী দিয়ে আসছিল। মামলার বাদী ডাঃ আবদুল খালেক ও তার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন বলে সাংবাদিকদের জানান।
