এবিএম আতিকুর রহমান বাশার :–
কুমিল্লার গোমতী নদীতে ভাসমান অবস্থায় জামসেদ(২৮) নামে এক যুবকের গলিত লাশ উদ্ধার করেছে দেবিদ্বার থানা পুলিশ। শুক্রবার সকালে সংবাদ পেয়ে দেবিদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক(এস,আই) নুরুল ইসলাম মজুমদারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের চরবাকর গ্রামের রফিউদ্দিন হাজী বাড়ির সামনে গোমতী নদীতে ভাসমান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া যুবক কুমিল্লা সদর উপজেলার দইয়ারা গ্রামের মৃত: আবুল ফজলের পুত্র এবং সে (জামসেদ) শারেরীক প্রতিবন্দী ছিল বলে তার পরিবার জানিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সকালে দেবিদ্বার উপজেলার চরবাকর এলাকায় গোমতী নদীর শ্রোতে একটি অজ্ঞাত একটি লাশ ভেসে যেতে দেখে স্থানীয়রা দেবিদ্বার থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ সংবাদ পেয়ে লাশ উদ্ধার পূর্বক থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ লাশটিকে অজ্ঞাত পরিচয়ে ময়না তদন্ত শেষে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের তত্বাবধানে দাফনের সিদ্ধান্ত নেন। পুলিশের ছোরত হাল রিপোর্টে লাশের শরীরে বড় ধরনের কোন ক্ষত চিহ্ন পায়নি। তবে লাশটি দু/তিন দিন নদীতে ভাসার কারনে লাশটি পচন ধরে যায় এবং ফুলে ফেঁপে বিকৃত হয়ে যায়। জিহ্বাটি একটু বের হওয়া ছিল। পরনে একটি টুইজার ও গেঞ্জি ছিল, হাতে একটি ক্যাসিও হাত ঘরি এবং পকেটে একটি মোবাইল সেট ছিল। পুলিশ মোবাইল সেটটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সিম কার্ডটি খুলে অন্য মোবাইল সেটে লাগিয়ে তার অনুসন্ধান শুরু করেন। সিম কার্ডটিতে দু’টি নম্বরের একটিতে আমজাদ ভাই লিখা যার নম্বর- ০১৭১০৬৪৩৯৯৫ ছিল এবং অপর নম্বরটি- ০১৬২৭৫৯০৬০০ তার বোন সামসুন্নাহার’র ছিল। আর নিহত যুবকের সিম কাডের নম্বরটি ছিল- ০১৯৬০৯৪৫২৪৫০। পুলিশ ওই সেল ফোন নম্বরের সূত্র ধরে নিহতের বোন ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাল্লা গ্রামের মাওলানা নজরুল ইসলামের স্ত্রী সামসুন্নাহার এবং বড় ভাই ঢাকা সেনা নিবাসে কর্মরত এমইএস আমজাদ হোসেন এবং আমজাদের স্ত্রী শিউলী আক্তার নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করেন এবং নিহতের লাশ সনাক্ত করার জন্য ডেকে আনেন। অপর দিকে নিহতের পরিচয় পাওয়ায়, লাশ আঞ্জুমান মফিদুলে হস্তান্তর না করে নিহতের লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাল মর্গে ময়না তদন্ত শেষে দেবিদ্বার থানায় নিয়ে আসেন।
নিহতের বোন সামসুন্নাহার জানান, তার ৬ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে জামসেদ ভাইদের মধ্যে পঞ্চম ছিল। সে প্রতিবন্দি ছিল, তার ডান হাত এবং ডান পা অনেকটাই অকেজু এবং মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিল। গত বুধবার দুপুরে ভাত খাওয়ার পর তার বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসার পর আর খোঁজ পাননি। খাওয়ার সময় তার মুখ থেকে লালা পড়ত। এব্যাপারে থানায় কোন সাধারন ডায়েরী করেননি, কারন বিভিন্ন সময় বাড়ি থেকে বের হলেও কিছুদিন পর আবার ফিরে আসত।
দেবিদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) মো: নূরুল ইসলাম মজুমদার জানান, লাশের সাথে থাকা মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পরিচয় নিশ্চিত করেছি এবং লাশ ময়না তদন্ত শেষে নিহতের পরিবারের নিকট হস্তান্তরও করে দিয়েছি।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান জানান, লাশটি অজ্ঞাত পরিচয়ে উদ্ধার হলেও পুলিশের তৎপরতায় পরিচয় উদঘাটন করে তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেছি। পরিবারের ভাষ্যানুযায়ী তার কোন শত্রু ছিলনা। ডান হাত এবং ডান পা অবস ছিল, খাবার খাওয়ার সময় মুখ দিয়ে লালা পড়ত এবং মৃগী রোগেও আক্রান্ত ছিল। বিষয়টি হত্যাকান্ড বলে কোন ধরনের অভিযোগ বা প্রমান না পাওয়ায় ময়না তদন্ত শেষে নিহতের বোনের জিম্বায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
