নাজমুল করিম ফারুক :–
কুমিল্লার হোমনায় জুয়ার টাকাকে কেন্দ্র করে সাদেক মিয়া (৩৫) নামের এক ব্যক্তির পা বিচ্ছিন্ন করায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজে মৃত্যুবরণ করে। এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার ঘনিয়ারচর গ্রামে এই নৃশংস ঘটনাটি ঘটে। আহত সাদেক মিয়া ওই গ্রামের উত্তর পাড়ার মৃত লিল মিয়ার ছেলে। মুমূর্ষু অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। উক্ত ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এদিকে আলোচিত হোমনা জুয়া বোর্ডের স্থান পরিবর্তন হলেও প্রকাশ্যে জুয়া খেলা বন্ধ না হওয়ায় এটাকে একাধিক জনপ্রতিনিধি কুমিল্লার কলংঙ্ক বলে অবহিত করেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাদেক এলাকার কতিপয় জুয়ারির নিকট সুদে টাকা লগ্নি করত এবং নিয়মিত জুয়া খেলতো। জুয়ার বোর্ডে লগ্নি দেয়া টাকা নিয়ে অন্যান্য জুয়ারীদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। এরই জের ধরে সাদেক ওই গ্রামের বড় চকের বাড়ীর উত্তর পাশের জমিতে জুয়া খেলার সময় উক্ত টাকাকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তাকে এলোপাতারিভাবে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। এসময় তার বাম পা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া তার দুই হাত, পেটে বিক্ষিপ্তভাবে কুপিয়ে আলগা করে ফেলে। মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয়রা ওই এলাকার বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে বিচ্ছিন্ন পা’টি উদ্ধার করে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. আবুল হোসেন জানান, জুয়ারীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আগে থেকেই জুয়া খেলার ওই স্থানে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছিলো। সাদেক সেখানে যাওয়া মাত্রই একই গ্রামের হক মেম্বারের ছেলে শেখ সাদি (২৫), আব্দুল বারিকের ছেলে সুমন (২৭), শ্যাম মিয়ার ছেলে ইসমাইল (২৮), হাজী মোশারফ মিয়ার ছেলে বিপ্লব (২৪), মুসলেম মিয়ার ছেলে শওকত (২৫), আব্দুস সাত্তারের ছেলে মাসুমসহ (২৫) অজ্ঞাত জুয়ারি সন্ত্রাসীরা তার উপর নৃশংস হামলা চালায়। এতে তার বাম পা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে ফেলে এবং দুই হাত ও পেটসহ সারা শরীরে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাদেক মারা যায়।
এদিকে একাধিক সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার পুলিশ সুপার হিসেবে নতুন জেলা পুলিশ সুপার দায়িত্ব গ্রহণের পর হোমনার আলোচিত জুয়া বোর্ড বন্ধে বার বার হোমনা পুলিশ প্রশাসনকে চাপ দিলেও বন্ধ হয়নি জুয়া বোর্ডটি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের এমন চাপে উপজেলা সদর থেকে উক্ত জুয়া বোর্ডটি ঘনিয়ারচরে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে উক্ত ঘটনাটি ঘটে। যা হোমনা ও আশেপাশের উপজেলাগুলোতে বুধবার দিনভর সমালোচনার বিষয়ে পরিণত হয়।
হোমনা থানার ওসি কামরুজ্জামান শিকদার বুধবার বিকাল ৬টায় জানান, এখনো লাশ এলাকায় এসে পৌছেনি। উক্ত ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।