মো. আলাউদ্দিন :–
লেভেল ক্রসিংয়ে গেইট নির্মাণ ও গেইট ম্যান নিয়োগ না করেই লাকসাম-চিনকি আস্তানা ডাবল রেল লাইনের উদ্বোধন করায় বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, গত ১৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে উদ্বোধন করার পর থেকেই লাকসাম-চিনকি আস্তানা ডাবল রেললাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এই রেল লাইন লাকসাম জংশন, নাওটি, নাঙ্গলকোট, হাসানপুর, গুনবতী, শর্শদি, ফেনী জংশন, কালীদহ, ফাজিলপুর, মুহুরীগানি ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল লাইনে চিনকি আস্তানা স্টেশনের সঙ্গে যুক্ত হবে। কিন্তু এসময় লাকসাম-চিনকি আস্তানার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত লেভেল ক্রসিংগুলোতে কোন গেইট স্থাপন করা হয়নি। এদিকে গেইট স্থাপন করার আগেই ডাবল রেল লাইন উদ্বোধন করায় এবং ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় সাধারণ জনগন ও পথচারীরা বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা প্রকাশ করেছেন।
নাঙ্গলকোট পৌর বাজার লেভেল ক্রসিং সংলগ্ন এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী ও চলাচলকারী পথচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই লেভেল ক্রসিং দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন, কিন্ডার গার্টেনে পড়–য়া কোমলমতি শিশু, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী চলাচল করেন। কিন্তু একাধিক বার এই লেভেল ক্রসিং পত্রিকার শিরোনাম হলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই লেভেলক্রসিংয়ে এখনও পর্যন্ত কোন গেইট নির্মাণ ও গেইটম্যান নিয়োগ করা হয়নি। গেইট এবং গেইটম্যান না থাকায় সাম্প্রতিকালে এই লেভেল ক্রসিংয়ে পুলিশের গাড়ি, বিভিন্ন ধরণের যানবাহন, এসএসসি পরীক্ষার্থী, সাধারণ পথচারীসহ অনেই দূর্ঘটনায় পতিত হয়েছেন। বিগত সময়ে এই লেভেল ক্রসিংয়ে দূর্ঘটনায় পতিত হয়ে ৩ পুলিশ সদস্য, ১ এসএসসি পরীক্ষার্থী, ৪জন সাধারণ পথচারী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অনেকে।
রেলওয়ে (পূর্বাঞ্চল) বিভাগের তথ্য মতে, লাকসাম থেকে চিনকি আস্তানা পর্যন্ত ৪টি বৈধ এবং ৮’শ থেকে ৯’শ অবৈধ লেভেল ক্রসিং রয়েছে। বৈধ লেভেল ক্রসিংয়ে গেইট এবং গেইটম্যান থাকলেও অবৈধ লেভেল ক্রসিংগুলোতে কোন গেইট নির্মাণ করা হয়নি। এমনকি কোন গেইটম্যানও নিয়োগ করা হয়নি।
এ ব্যাপারে নাঙ্গলকোট পৌর বাজারের ব্যবসায়ী খন্দকার মোঃ সহিদ বলেন, যখন সিঙ্গেল লাইন ছিল তখনও গেইট বিহীন লেভেল ক্রসিংগুলোতে একাধিক প্রাণঘাতি দূর্ঘটনা ঘটেছে। ডাবল লাইন চালু হওয়ার পর ট্রেনের গতিবেগ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে যেকোন সময় গেইট বিহীন লেভেল ক্রসিংগুলোতে আরও বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই লেভেল ক্রসিংগুলোতে গেইট নির্মাণ করে গেইটম্যান নিয়োগ করা অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে।
রেলওয়ের (পূর্বাঞ্চল) ট্রাফিক পরিদর্শক মাসুদ সরওয়ার জানান, লাকসাম থেকে চিনকি আস্তানা পর্যন্ত ৪টি বৈধ এবং ৮’শ থেকে ৯’শ অবৈধ লেভেলক্রসিং রয়েছে। বৈধ লেভেলক্রসিংগুলোতে গেইট নির্মাণ করে গেইটম্যান নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া অবৈধ লেভেলক্রসিংগুলো থেকে বাছাই করা জনগুরুত্বপূর্ণ ৭/৮টি ক্রসিংয়ে গেইট নির্মাণের কাজ শিগগিরই শুরু হবে।