মো. আলাউদ্দিন :–
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় মাছ চাষে নিরব বিপ্লব ঘটেছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাষ করা মাছের প্রজেক্ট এখন চোখে পড়ার মত। লাভবান হওয়ায় দিন দিন বিভিন্ন পেশার মানুষসহ এলাকার বেকার যুবকরা মাছ চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। পাইকারী আড়তদাররা প্রতিদিন এ উপজেলার বিভিন্ন প্রজেক্ট থেকে মাছ কিনে পিকআপ ভ্যানে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যেতে দেখা যায়। উপজেলার অধিকাংশ মাছ চাষী এখন স্বাবলম্বী। তারা বছরে আয় করছে লক্ষ কোটি টাকা। এতে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে মৎস্য প্রজেক্ট করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে চলেছেন সফল উদ্যেক্তারা। মৎস্য প্রজেক্টের কারণে লোকজনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং পুষ্টিকর খাদ্যের চাহিদা পূরণে তারা সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার জোড্ডা ইউনিয়নের পানকরা গ্রামের কামরুল হাছান ভূঁইয়া রোকন পানকরা গ্রামে অন্তত ৫ একর জমিতে বিশাল মৎস্য প্রজেক্ট স্থাপন করেছেন। ভূঁইয়া মৎস খামার নামের ওই প্রজেক্টে রুই, কাতল, মৃগেল, পাঙ্গাস, সরপুটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ চাষ করছেন তিনি। মৎস্য প্রজেক্টের ভেতরে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন গাছ। মৎস্য প্রজেক্টের অপরূপ সৌন্দর্য সকলের দৃষ্টি নন্দন করেছে। মৎস্য প্রজেক্ট করে লোকজনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং মাছ ও পুষ্টিকর খাদ্যের চাহিদা পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
প্রজেক্টের প্রতিষ্ঠাতা কামরুল হাছান ভূঁইয়া রোকন বলেন, জমিতে ধান চাষ করে লোকসান গুনতে হয়। কিন্তু মাছ চাষ করে লোকসানের সম্ভাবনা নেই। পাশাপাশি বেকার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ আমিষ ও পুষ্টিকর জাতীয় খাদ্যের যোগান দেয়া সম্ভব হয়। তাই তিনি অন্যান্য ব্যবসার সাথে মৎস্য চাষের ব্যবসা চালু করেছেন। ভবিষ্যতে তিনি প্রজেক্টের পরিধি বাড়িয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি সুষম খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি শিল্প-কলকারখার পাশাপাশি সুষম খাদ্য উৎপাদন মুখি প্রকল্প গড়ে তোলার জন্য ব্যবসায়ী সমাজের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, এতে একদিকে প্রচুর সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ দেশের জনগণের সুষম খাদ্যের চাহিদা পুরণ হবে। অপর দিকে এসব উৎপাদিত দ্রব্য সামগ্রী বিদেশে রপ্তানী করে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশীক মদ্র্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। তাতে আমাদের দেশের মানুষকে অনেক টাকা খরচ করে বিদেশে পাড়ি জমিয়ে কষ্ট ভোগ করতে হবেনা। দেশে থেকেই বিদেশের চেয়ে অনেক বেশি টাকা উপার্জন করতে পারবে। এর জন্য দেশের ব্যবসায়ী সমাজকে এখনি ভাবতে হবে। নিতে হবে পরিকল্পিত পরিকল্পনা। পাশাপাশি আমাদের বহুল জনসংখ্যা অধ্যুষিত এ বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হলে বেকার সংখ্যা দূরীকরণের লক্ষ্যে সরকারকেও এসব বিষয়ে ভাবতে হবে। নিতে হবে উপযুক্ত পরিকল্পনা। যুগোপযোগী প্রদক্ষেপ নিতে পারলে অচিরেই আমরা বিশ্বের একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে সুনাম বয়ে আনতে পারব।