কুমিল্লাওয়েব ডেস্ক :–
বঙ্গোপসাগরে সফলভাবে মিসাইল উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বাৎসরিক সমুদ্র মহড়া ‘এক্সারসাইজ সি থান্ডার-২০১৫’মঙ্গলবার সমাপ্ত হয়েছে। ভারত ও মিয়ানমার এর সাথে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের পর এবারই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের সম্পূর্ণ সমুদ্রসীমায় অনুষ্ঠিত হলো এই সমুদ্র মহড়া।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সর্ববৃহৎ যুদ্ধজাহাজ বানৌজা ‘সমুদ্র জয়’ থেকে সমাপনী দিবসের মহড়াসমূহ প্রত্যক্ষ করেন। এসময় নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল এম ফরিদ হাবিব উপস্থিত ছিলেন। এর আগে প্রধান অতিথি জাহাজে এসে পৌঁছালে কমডোর কমান্ডিং বিএন ফ্লোটিলা কমডোর এম খালেদ ইকবাল এবং বানৌজা সমুদ্র জয়ের অধিনায়ক ক্যাপ্টেন ডব্লিউ এইচ কুতুবউদ্দিন তাঁকে স্বাগত জানান। নৌবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল জাহাজে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।
মহড়ার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির পর প্রধান অতিথি মহামান্য রাষ্ট্রপতি চট্টগ্রাম নৌঅঞ্চলের সকল কর্মকর্তা ও নাবিকদের উদ্দেশ্যে মূল্যবান বক্তব্য প্রদান করেন। বক্তব্যে তিনি সফল মহড়ার জন্য নৌসদস্যদের অভিনন্দন জানান এবং তাদের পেশাগত মান, দক্ষতা ও কর্মনিষ্ঠার ভূঁয়সী প্রশংসা করেন। প্রধান অতিথি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং সমুদ্র সম্পদ রক্ষায় সকলকে নিবেদিতভাবে কাজ করে যাওয়ার আহবান জানান।
দীর্ঘ ১৬ দিনব্যাপী আয়োজিত এই মহড়ায় নৌবাহিনীর সকল যুদ্ধজাহাজ, স্পেশাল ফোর্স সোয়াডস্, নেভাল এভিয়েশনের মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট ও হেলিকপ্টার ছাড়াও নৌবাহিনীর সকল ঘাঁটি ও স্থাপনাসমূহ অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও উক্ত মহড়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও মেরিটাইম সংস্থাসমূহ অংশগ্রহণ করে।
মোট চারটি ধাপে অনুষ্ঠিত এ মহড়ার উল্লেখযোগ্য দিকসমূহের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল নৌবহরের নৌযুদ্ধবিদ্যার বিভিন্ন কলাকৌশল অনুশীলন, সমুদ্র এলাকায় অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান, লজিষ্টিক অপারেশন, এ্যামফিবিয়াস ল্যান্ডিং অপারেশন, উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত নৌ স্থাপনাসমূহের প্রতিরক্ষা মহড়া প্রভৃতি। নৌ বাহিনীর এ বার্ষিক মহড়ার মূল প্রতিপাদ্য ছিল সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও অন্যান্য মেরিটাইম সংস্থাসমূহের সমন্বয়ে বাস্তব অবস্থার সাথে মিল রেখে বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকার সার্বভৌমত্ব ও সামুদ্রিক স্বার্থরক্ষায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সক্ষমতা মূল্যায়ন করা। চূড়ান্ত দিনের মহড়ার উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ হতে মিসাইল উৎক্ষেপণ, সাবমেরিন বিধ¦ংসী রকেট ডেপথ চার্জ নিক্ষেপ, বিমান বিধ¦ংসী কামানের গোলাবর্ষণ, নৌকমান্ডো অপারেশন ও নৌযুদ্ধের বিভিন্ন কলাকৌশল।
এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সংসদ সদস্যবৃন্দ, মহামান্য রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব শেখ আলতাফ আলী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ উচ্চ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।