স্টাফ রিপোর্টার :–
শুক্রবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সুপ্রাচীন বৌদ্ধ সভ্যতা ও সংস্কৃতির অন্যতম পীঠস্থান ঐতিহাসিক পূণ্যতীর্থ ভূমি কুমিল্লা ময়নামতি কোটবাড়ী নব শালবন বিহারে নির্মানাধীন থাইল্যান্ডের স্থাপত্যকলাসমৃদ্ধ আন্তর্জাতিকমানের দৃষ্টিনন্দন শান্তি প্যাগোডায় থাইল্যান্ড এর দানকৃত ৩০ ফুট উঁচু দণ্ডায়মান পূত পবিত্র বুদ্ধমূর্তি স্থাপন করা হয়।
ওই পূণ্যানুষ্ঠানে থাইল্যান্ড হতে আগত বিশিষ্ট সাধক চায়ানান সানসনচাই (Mr. CHANYANAN SANSONCHAI) সহ থাইল্যান্ডের ৭৫জনের একটি প্রতিনিধিদল অংশ গ্রহণ করেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন- নব শালবন বিহার কমপ্লেক্সের প্রতিষ্ঠাতা কর্মবীর শ্রীমৎ শীলভদ্র মহাথের। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- থাইল্যান্ডের আন্তর্জাতিক সমন্বয়কারী সুগতপ্রিয় থের, নব শালবন বৌদ্ধ বিহারে থাইল্যান্ড এর দানকৃত দণ্ডায়মান পূতপবিত্র বুদ্ধমূর্তি প্রতিষ্ঠা উদযাপন পরিষদের মহাসচিব জ্যোতিষ চন্দ্র সিংহ, ইয়াং ম্যান্স বুদ্ধিস্ট এসোসিয়েশন (ওয়াই. এম. বি. এ) এর মহা সচিব স্বপন চন্দ্র সিংহ, নাট্য অভিনেতা শতদল বড়–য়া, দৈনিক রূপসী বাংলার স্টাফ রিপোর্টার অশোক বড়–য়া, দৈনিক ভোরের কাগজ কুমিল্লার প্রতিনিধি জাকারিয়া মানিক, কুমিল্লা সিটি প্রেসক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক তাপস চন্দ্র সরকার, অনিক বড়–য়া (ঝুনু) সহ দেশী-বিদেশী শত শত বৌদ্ধ ধর্ম্মালম্বী নর-নারী।
তদুপলক্ষ্যে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানসূচীর মধ্যে ছিল যথাক্রমে সকাল ৭টায় জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, মাঙ্গলিক কর্ম সম্পাদনের জন্য বুদ্ধমূর্তির মূলবেদীতে থাই পূজারী’র আগমন, থাইল্যান্ড এর দানকৃত পবিত্র বুদ্ধমূর্তি স্থাপনের আনুষ্ঠানিকতা, মহান ভিক্ষু সংঘের পিন্ডদান, অতিথি আপ্যায়ন, মঙ্গলাচরণ, থাইল্যান্ড হতে আগত অতিথিদের সংবর্ধনা, সন্ধ্যায় নব প্রতিষ্ঠিত পূতপবিত্র বুদ্ধমূর্তির বেদিমূলে প্রদীপ পূজা এবং সমবেত প্রার্থনা, নির্মানাধীন শান্তি প্যাগোডার হলে ভাবনা অনুশীলন।
লিফলেট সূত্রে জানা যায়- দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সুপ্রাচীন বৌদ্ধ সভ্যতা ও সংস্কৃতির অন্যতম পীঠস্থান ও ৮ম শতাব্দীর সর্ববৃহৎ বিহারকেন্দ্রিক বিদ্যাপীঠ ঐতিহাসিক পূণ্যতীর্থ ভূমি কুমিল্লা ময়নামতি কোটবাড়ী নব শালবন বিহার সহ প্রায় ২৩টি বৌদ্ধ বিহার এবং মহামূল্যবান প্রতœতত্ত্ব সম্পদে সমৃদ্ধ প্রাচীন বাংলার “সমতট” অঞ্চল হিসেবে খ্যাত পবিত্র এ ভূমি মহামানব গৌতম বুদ্ধের পদস্পর্শে ধন্য হয়েছিল। বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র হওয়ায় এখানে প্রতিনিয়ত দেশী-বিদেশী পর্যটক ও জ্ঞানপিপাসের সমাগম বেড়ে চলছে। কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া ময়নামতি অঞ্চলের বৌদ্ধ সভ্যতাগুলো বিশ্ব পরিমণ্ডলে পরিস্ফুটিত করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে নিরন্তর কাজ করে চলেছে কুমিল্লার ইয়াং ম্যান্স বুদ্ধিস্ট এসোসিয়েশন। প্রাচীন বৌদ্ধ সভ্যতাগুলো নিয়ে গবেষণা এবং সুষ্ঠ ও পরিপূর্ণ ধর্মীয় চর্চার কেন্দ্র গড়ে তোলার মানসে বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট কালচার্যাল একাডেমী স্থাপনের জন্য সংগঠনের সনির্বন্ধ আবেদনে সাড়া দিয়ে সদাশয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার পূণ্যতীর্থ ভূমি ঐতিহাসিক শালবন মহাবিহার সংলগ্ন ২.২৮ একর ভূমি বরাদ্দ দিয়েছেন। মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে নব শালবন বৌদ্ধ বিহার, শালবন বিহার অনাথালয় ও লাইব্রেরী স্থাপন।
ঊনবিংশ শতাব্দির সূচনালগ্নে ক্ষণজন্মা সমসাময়িক বৌদ্ধ ইতিহাসের প্রবাদ পূরুষ মহান একুশে পদক-২০১০, স্বাধীনতা পদক-২০১১ সহ বহু দেশি ও আন্তর্জাতিক পদক ও অভিধায়ক ভূষিত, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম আন্তর্জাতিক সংগঠক মহামান্য সংঘরাজ পণ্ডিতপ্রবর শ্রীমৎ জ্যোতিঃপাল মহাথেরোর স্মরণে গঠিত “ সংঘরাজ জ্যোতিঃপাল মহাথেরো ফাউন্ডেশন” এর পৃষ্ঠপোষকতায় এবং থাইল্যান্ডে অধ্যয়নরত ফাউন্ডেশনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সমন্বয়কালী পরম কল্যাণমিত্র শ্রীমৎ সুগতপ্রিয় থেরোর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র থাইল্যান্ডের সদ্ধর্র্মপ্রাণ উপাসক-উপাসিকা এবং দাতাদের সাহার্য্যানুুকুল্যে নব শালবন বিহারের পবিত্র আঙিনায় নির্মিত দৃষ্টি নন্দন “ পীস্ প্যাগোডা অনালয়ো, থাইল্যান্ডে নির্মিত দণ্ডায়মান ৩০ফুট উঁচু পূতপবিত্র বুদ্ধমূর্তি প্রতিষ্ঠা এবং প্রধান উপাসনালয়”।