নাটোর প্রতিনিধি:–
নাটোরে হরতালের দ্বিতীয় দিনে আওয়ামী লীগ বিএনপির সংর্ঘষের ছবি তোলার সময় গুরুতর ভাবে আহত হয়ে আরটিভির নাটোর জেলা প্রতিনিধি শেখ তোফাজ্জ্বল হোসাইন যখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন তখন নাটোরে ১৮ দল ও আওয়ামী লীগ পৃথক পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার দায় একে অন্যের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টায় ব্যস্ত রয়েছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নাটোর সার্কিট হাউজে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সম্পাদক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেছেন, ১৮ দলীয় জোটের সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগ কর্মীদের উপর আক্রমনের সময় সাংবাদিক তোফাজ্জল হোসাইন ভিডিও করতে গেলে যুবদল নেতা আব্দুল মালেক ক্ষিপ্ত হয়ে তোফাজ্জলের উপর ককটেল নিক্ষেপ করে। আর সেই ককটেলেই তোফাজ্জল আহত হয়। অন্যদিকে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা বিএনপির অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয় নাটোর জেলা যুবলীগের সভাপতি মোঃ শরিফুল ইসলাম রমজান ও সিনিয়র সহ-সভাপতি বাসিরুল রহমান খান চৌধুরী এহিয়া কানাইখালীতে ১৮দল কর্মীদের উপর প্রকাশ্যে হামলা করে। এ সময় বাসিরুল রহমান খান চৌধুরী এহিয়া দুই হাতে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গুলি শুরু করলে সাংবাদিক তোফাজ্জ্বল তা ভিডিও করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে অর্কথ্য ভাষায় তোফাজ্জলকে গালিগালাজ করে। তাদের অস্ত্রবাজির ভয়ে ১৮ দলের নেতাকর্মীরা সেখান থেকে সরে গেলে ফাঁকা মাঠে তাদেরই পেটুয়া বাহিনী তোফাজ্জ্বলকে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঠা দিয়ে মেরে মারত্মকভাবে আহত করে এবং তার ক্যামেরাটি ভেঙ্গে দেয়। এ ঘটনার জন্য পুরোপুরি যুবলীগকে দায়ী করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন ১৮ দল। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাটোর জেলা ১৮ দলীয় জোটের আহবায়ক ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিনুল হক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নাটোর জেলা ১৮ দলীয় জোটের সদস্য সচিব ও নাটোর জেলা জামায়াতে ইসলামির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ দেলোয়ার হোসেন খান, নাটোর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রহিম নেওয়াজ, শহর সভাপতি অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন তালুকদার টগর ও জেলা প্রচার সম্পাদক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিন।
অপরদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলনে ককটেলের আঘাতে সাংবাদিক তোফাজ্জল হোসাইন আহত হয়েছে দাবী করায় নাটোরের প্রথম আলোর সাংবাদিক মুক্তার হোসেন প্রতিমন্ত্রীকে জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সোমবার সারারাত চিকিৎসকরা আহত সাংবাদিকের অস্ত্রপচার করেছেন। তার চিকিৎসক এবি সিদ্দিক জানিয়েছেন, ককটেল নয় লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করা হয়েছে। অস্ত্রের আঘাতটি তার ফুসফুসকে স্পর্শ করেছে। এতে ফুসফুসের রক্তক্ষরন বন্ধ হচ্ছে না। ফলে তার অবস্থা খুবই আশংকাজনক। উপস্থিত সাংবাদিকরা এ সময় ঘটনার দায় একে অন্যের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা না করে প্রকৃত দোষীদের সনাক্ত করার দাবী জানান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ সাজেদুর রহমান খান, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ও নাটোর জেলা যুবলীগের সভাপতি মোঃ শরিফুল ইসলাম রমজান । ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এ ঘটনার জন্য ১৮দলকে দায়ী করেন।