দেবিদ্বার প্রতিনিধিঃ–
দেবিদ্বারে যৌতুকের দাবীকৃত দশ লক্ষ টাকা পরিশোধ না করায় শ্বশুর পরিবারের অমানবিক ও নির্মম নির্যাতনের শিকার সৈয়দা মিলি আক্তার(২৫) নামে এক গৃহবধূ দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার সকাল ৭টায় উপজেলার সুবিল গ্রামে। একই সময়ে ওই গৃহবধূর বড় ভাই সৈয়দ এমদাদুল হক(৩০)কে ডেকে নিয়ে তাকেও রড দিয়ে পিটিয়ে ও বেধরক মারধর করে বাম হাত ভেঙ্গে আহত করে। সংবাদ পেয়ে দেবিদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক(এস আই) রোকেয়া বেগম একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে নির্যাতিতা গৃহবধূ সৈয়দা মিলি আক্তার ও তার ভাই আহত সৈয়দ এমদাদুল হককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তী করিয়েছেন।
স্থানীয় ও নির্যাতিত পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১১ সালের ২৬ নভেম্বর দেবিদ্বার উপজেলার সুবিল গ্রামের আব্দুল খালেকের পুত্র মোঃ মোমেন মিয়া(৩০)’র সাথে একই উপজেলার ছোটশালঘর গ্রামের মৃতঃ সৈয়দ আব্দুল বারীর মেয়ে সৈয়দা মিলি আক্তার’র বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বর পক্ষকে নগদ দেড়লক্ষ টাকা, পাঁচ ভরী স্বর্ণালংকার, আসবাব সামগ্রী প্রদান করতে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে মাছ ব্যবসার নামে আরো দশ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে প্রতিনিয়ত গৃহবধূর উপর চালায় শারিরীক ও মানষিক নির্যাতন। একই ঘটনায় শুক্রবার সকালে দশ লক্ষ টাকা এনে দিতে গৃহবধূর উপর চালায় শারেরীক নির্যাতন। স্বামী মোমেন মিয়া, ননস হেলেনা আক্তার(৩৬) ও রুনা লায়লা(৪০), শ্বশুর আব্দুল খালেক(৭০), শ্বাশুরী দেলোয়ারা বেগম(৬৫) গৃহবধূ মিলি আক্তারকে কিল-ঘুষি, চর-থাপ্পর এবং চুল টানাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, নির্যাতনের মাত্রায় খুন্তিপোড়া ছেকাও যুক্ত করে তার শরীর ক্ষত-বিক্ষত করে দেয়। অপরদিকে নির্যাতিতা গৃহবধূর ভাই সৈয়দ এমদাদুল হককে যৌতুকের দশ লক্ষ টাকা না দিলে তার বোনকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বলে ডেকে আনে। এনিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রড দিয়ে পিটিয়ে তার বাম হাত ভেঙ্গে দেয়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন নির্যাতিতা গৃহবধূ সৈয়দা মিলি আক্তার বলেন, যৌতুক দাবীর দশ লক্ষ টাকার জন্য স্বামী, ননস, শ্বশুর, শ্বাশুরীর প্রতিনীয়ত শারিরীক-মানষিক নির্যাতনই নয়, ওরা আমাকে আগুনে পোড়া খুন্তি ছেকায় সারা শরীর ক্ষত বিক্ষত করে দিয়েছে। ওরা আমার ভাইকে ডেকে এনে তার বাম হাত ভেঙ্গে দেয়।
নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী মোঃ মোমেন মিয়া তার স্ত্রীকে মারধরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যৌতুকের টাকার জন্য তাকে মারি নাই, আমার সাথে খারাপ আচরনের জন্য তাকে মেরেছি। এ ঘটনায় আমার জেল-ফাঁস হলেও ভয় করিনা।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম বদিউজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গৃহবধূকে উদ্ধার করে এনে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি, চিকিৎসা চলছে, পরে মামলা হবে।
