আরিফুল ইসলাম সুমন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:–
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বিএডিসি’র ভেজাল বীজের ফাঁদে পড়ে শতাধিক কৃষক-কৃষানী এখন দিশেহারা। জমির ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মহাজনী ঋণ পরিশোধে অনেক কৃষকের পথে বসার মত অবস্থা হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাষ করা বি.আর ২৯ জাতের চারার ধান শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। অনেক জমির চারাগুলোতে এখনো ফলন দেখা দেয়নি। এ অবস্থায় কৃষকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। উপজেলা সদরের কৃষক মো. সরাজ মিয়া বলেন, ৯০ শতক জমিতে বি.আর ২৯ জাতের ধান চাষ করেছি। এতে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন চারার ধান শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। কৃষাণী আবুনী বেগম বলেন, আমি মহাজনী ঋণে ৩০ শতক জমিতে বি.আর ২৯ জাতের ধান চাষ করেছি। বীজ সংগ্রহ করেছি উপজেলা সদরের চাষী ঘর থেকে। এখনও চারাগুলোতে ধানের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। কৃষি অফিসের লোকেরা বলছেন ভেজাল বীজের কারণে এমনটি হয়েছে। কুট্টাপাড়া এলাকার কৃষক তৌহিদউল্লাহ খন্দকার বলেন, ১২০শতক জমিতে বিএডিসি’র বি.আর ২৯ জাতের ধান চাষ করি। চারার ধান মরে শুকিয়ে গেছে। ভেজাল বীজ রোপনের কারণে এই ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা জানান।
উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি মো. শফিকুর রহমান বলেন, উপজেলায় বিএডিসির বি.আর ২৯ জাতের বীজ সরবরাহ করেছে এখানকার ‘মেসার্স চাষী ঘর’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এ জাতের ভেজাল বীজের ফাঁদে পড়ে শত শত কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শফিকুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, এখানকার সার-বীজ মনিটরিং কমিটির অবহেলা ও গাফিলতির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাদের তৎপরতা না থাকায় সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা ভেজাল বীজ তুলে দিয়েছে সহজ-সরল কৃষকদের হাতে।
বিএডিসি বীজ পরিবেশক (ডিলার) মেসার্স চাষী ঘর এর সত্বাধিকারী মেহেদী হাসান পলাশ সাংবাদিকদের বলেন, বিএডিসি’র বীজে মাঝে মধ্যে ভেজাল থাকে। তবে তা ধরা খুবই কঠিন।
সরাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা সার-বীজ মনিটরিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক মশিহুর রহমান বলেন, কয়েকটি এলাকার বিএডিসির বীজে ভেজাল থাকে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিজে লাভবান হতে ভেজাল নিন্মমানের বীজ কৃষকের কাছে বিক্রি করে। ভেজাল বীজের কারণেই জমির ধান নষ্ট হয়েছে। তবে এর সংখ্যা খুবই কম। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।