মিজানুর রহমান সরকার, ব্রাহ্মণপাড়া:–
নির্মান কাজ সমাপ্তির পর দীর্ঘ আড়াই বছর অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কুমিল্লায় আসার পর উদ্বোধন করবেন বলে জানান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পকিল্পনা কর্মকর্তা ডা: আবু জাহের। ৩১ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০০৯ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করতে পাঁচ কোটি টাকা ব্যায়ে ১৯ শয্যা বিশিষ্ট একটি পূর্নাঙ্গ তিনতলা হাসপাতাল ভবন নির্মানের কাজ শুরু হয়। ২০১০ সালে ভবন নির্মানের কাজ শেষ হওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক হস্তান্তর করা হয়। আড়াই বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও উদ্বোধন না হওয়ায় ৫০ শয্যার স্থলে ৩১ শয্যার সেবা পাচ্ছে উপজেলার ৩ লক্ষ মানুষ। রোগীদের চাপ বেশী থাকায় হাসপাতালের মেঝেতে বিছানা করে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছে শিশুসহ অন্যান্য রোগীরা। এতে একদিকে উপজেলাবাসী স্বাস্থসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, অন্যদিকে পড়ে থেকে অযতেœ অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে ৫ কোটি টাকায় নির্মিত সরকারী সম্পদ ভবনটি। ৩১ শয্যার বর্তমান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাথে ১৯ শয্যার নতুন এই ভবন চালু হলে ৫০ শয্যা হাসপাতালের কার্যক্রম চালু হতো। এর ফলে পদায়ন করা হতো মেডিসিন, সার্জারী, চর্ম ও যৌন রোগ, গাইনী, শিশু, চক্ষু, নাক কান গলা ও আর্থপেডিক বিভাগে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। এছাড়াও অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটারের মাধ্যমে যেকোন অস্ত্রোপচার করা যেতো। উপকৃত হতো এলাকার জনগন, অল্প টাকায় পেতো স্বাস্থ্য সেবা। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষ গুলো নিজেদের চাষাবাদের জমি, ভিটি বাড়ী, বিক্রি করে কুমিল্লা কিংবা ঢাকায় যেতে হয়। এতে করে শুধু তাদেরি কষ্ট হয় তা নয়, কুমিল্লা শহড়ের ডাক্তারদের রোগীর চাপও বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। গুরুত্বপূর্ন ৩৫টি পদ খালী রয়েছে। এর মধ্যে মেডিক্যাল অফিসার নেই, আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার নেই, সহকারী ডেন্টাল সার্জন নেই, ৪জন সহকারী সার্জনের পদ শূন্য রয়েছে। এনেসথেসিয়া ডাক্তার জনবলে থেকেও ২০০৩ সাল থেকে প্রেষনে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজে কর্মরত রয়েছেন। এখানে কোন অস্ত্রোপচার করা হয়না। ডেন্টাল সার্জন ও ডেন্টাল চিকিৎসা দেওয়ার মত কোন যন্ত্রপাতি নাই। একমাত্র এক্সরে মেশিনটি বেশীর ভাগ সময় নষ্ট হয়ে পড়ে থাকে। জেনারেটর দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। দায়িত্বরত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো: আবু জাহের বলেন, নব নির্মিত ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির নতুন ভবন উদ্বোধন হলে রোগীদের চাপ কমে যেত। অপারেশন থিয়েটার সহ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পদায়ন করা হতো, এলাকার মানুষ পেত উন্নত স্বাস্থ্য সেবা। এসব সমস্যা নিয়েও ৫০ শয্যা হাসপাতালের নতুন ভবন উদ্বোধন হওয়ার পূর্ভাবাসে উচ্চাসিত এলাকার আপামর জনসাধারণ।
