কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে জমকালো বর্ষবরণ

রাসেল মাহমুদ,কুবি থেকে:–
পহেলা বৈশাখ। পুরাতনকে বিদায় জানিয়ে নতুনকে নিয়ে বারবার ফিরে আসে বাঙালির প্রাণে। যুগ যুগ ধরে বাংলা নববর্ষ এলে সব ভেদাভেদ ভুলে আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠে বাঙালি মন। নতুন বর্ষকে বরণ করতে প্রাণের টানে একত্রিত হয় বাংলা-বাঙালি।
রোববার ভোর থেকেই বাঙালি চিরায়ত বাংলা বর্ষবরণ করতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা- কর্মচারী সহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার হাজারো মানুষ।
এরপর সকাল ১০ টার দিকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভিসি প্রফেসর ড. আমির হোসেন খানের নেতৃতে¦ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা- কর্মচারী সহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে এক বিশাল র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালীটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ও ক্যাম্পাসের বাহিরে ময়নামতি যাদুঘর প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
র‌্যালী শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে থিয়েটার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পিরা নাচ, গান, কবিতা আবৃতি, অভিনয় সহ বিভিন্ন ধরনের নৈপুন্য প্রদর্শন করেন।
এছাড়া থিয়েটারের আয়োজনের মধ্যে আরো ছিল : পান্তা ইলিশের ষ্টল, থিয়েটার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটা, রোড পেইন্টিং এবং ডকুমেন্টরী প্রদর্শন।
থিয়েটার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, এবছর আমরা থিয়েটারের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছিলাম এবং আমরা বর্ষ বরণের অনুষ্ঠানকে অত্যন্ত সুন্দর ও সাফল্য মন্ডিত করতে পেরেছি বলে আশা করছি। তিনি এজন্য কুবির সকল ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ,কর্মকর্তা- কর্মচারী সহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন
র‌্যালী শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভিসি প্রফেসর ড. আমির হোসেন খান বলেন : কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে আমরাও বলতে চাই,‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,অগ্নি স্নানে শুচি হোক ধরা/রসের আবেশ রাশি শুষ্ক করি দাও আসি, আনো আনো আনোতব প্রলয়ের শাঁখ/ মায়ার কুজ্ঝটি জাল যাক দূরে যাক/এসো হে বৈশাখ’ নতুনের ডাক দিয়ে আবার এল বৈশাখ। বিগত বছরের সব অপূর্ণতা, গ্লানি, ব্যর্থতা মুছে ফেলে জীবন কে নতুন করে সাজিয়ে তোলার আশায় বাঙালি আজ উৎযাপন করছে তার একাšত আপন নতুন বর্ষ। আজ বাঙালির নববর্ষ। প্রাত্যহিক জীবন যাত্রার ব্যবহারিক প্রয়োজন মেটাতে যদিও এখন গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জিরই শরণাপন্ন হতে হয়, তবু বাংলা বর্ষ পঞ্জির অনুসরণএকেবাওে বিলুপ্ত হয়নি বাঙালির জীবন থেকে। কৃষি নির্ভও এই দেশের গ্রামাঞ্চলের মানুষ চাষাবাদ, ঋতু পরিক্রমা অনুসরণ, নানাতিথি-পার্বণ, আচার অনুষ্ঠান পালনের দিনক্ষণ নির্ধারণে এমন নানা বা¯তব প্রয়োজনে বাংলা বর্ষ পঞ্জিই অনুসরণ করে। তবে এসব দৈনন্দিন কর্মকান্ডকে ছাপিয়ে উৎসবের আয়োজনে বাঙালির নিজস্ব বর্ষ বিশেষ অগ্রাধিকার পেয়েছে। পয়লা বৈশাখ পরিণত হয়েছে বাঙালির জীবনে সর্ববৃহৎ উৎসবে। সংস্কার, মতাদর্শের মতো সীমাবদ্ধতা গুলো অতিক্রম করে, বৈশাখী উৎসব আজ বাংলা ভাষা ভাষী সব মানুষের হৃদয়াবেগ থেকে উৎসারিত এক অতুলনীয় মহোৎসবে পরিণত হয়েছে।

Check Also

করোনাযুদ্ধে প্রথম জীবন উৎসর্গকারী কনস্টেবল জসিমকে বুড়িচংয়ে সমাহিত

বুড়িচং প্রতিনিধিঃ করোনাযুদ্ধে পুলিশে প্রথম জীবন উৎসর্গকারী কনস্টেবল জসিম উদ্দিনকে (৩৯) কুমিল্লায় সমাহিত করা হয়েছে। ...

Leave a Reply