নাম রাখাল দেবনাথ।সারাদিন তাতের মেশিনে খটখট করে তৈরী করেন ১৫ গজ খদ্দর কাপড়। দিনের মজুরী ১৫০টাকা হলেও তার দুপুরের খাবার আর পান বিড়িতে খরচ হয় ৫০টাকা। পূর্বপুরুষের পেশা বলে এখনও সম্মান দেখিয়ে ধরে রেখেছেন খাদি বুননের কাজ। পঞ্চাশোর্ধ রাখাল বাবু তার কোন ছেলেকেই আর আনতে পারছেন না এ পেশায়। বড়কামতায় রঞ্জিত বাবুর যে মেশিনঘরে চৈত্রের ভরদুপুরে কাজ করছিলেন তিনি সেখানে ৫টি মেশিনের মাঝে এখন কাজ চলছে শুধু তারটিতেই। অন্যদিকে গান্ধিজীর আশির্বাদে খাদি শিল্পের এক প্রাণপুরুষ শৈলেন গুহ গড়ে তোলেন গ্রামীন খাদি। তার ছেলে অরুন গুহ হুগলিতে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ফাইনাল পরীক্ষার পূর্বে দেশে ফিরে আসলে আর যাওয়া তার। ৪বছর পড়াশোনার পরও বিএসসি পরীক্ষাটা দেওয়া হলো না তার। বাবার পেশাটাকেই যত্নের সাথে ধরলেন তিনি। খাদিকে উন্নত বিশ্বে পরিচিত করতে একবার স্পেনের বার্সেলোনা আর তিনবার ভারতে যান এক্সিভিশনে। এ মানুষগুলোর পর হয়তো তাতের মেশিনে খটখট শব্দের যায়গায় হাজির হবে অটোমেশিনে উৎপাদন। কিন্তু সে কাপড়টিকে খাদির বলার চেষ্টা হলেও নিখুত খাদি আর আসবে না। আমরা যেমন এখন মসলিনের গল্প করি। খাদিকেও যাদুঘরে রাখা হবে তাতের মেশিন আর সূতার চড়কাসহ।
