সরাইলে খাল দখলের প্রতিযোগিতা : প্রশাসন নির্বিকার

আরিফুল ইসলাম সুমন, স্টাফ রিপোর্টারঃ—–
সরাইলে শুরু হয়েছে খাল দখলের প্রতিযোগিতা। যে যার মতো করে নেমেছেন খাল দখলে। দিন দুপুরে খাল দখলের এ দৃশ্য সংশ্লিষ্টদের নজরে এলেও সবাই যেন চুপ। গত কয়েকদিনে খালের বড় একটা অংশে মাটি ফেলে দখল করে ফেলেছেন প্রভাবশালীরা।
উপজেলার ‘কালীকচ্ছ-বিশুতারা’ নামক ওই খাল দখলের ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাঁরা বলছেন খালটি দখল হলে সেচ কাজে বিঘœ ঘটবে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় ভূমি বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জনগুরুত্বপূর্ণ এই খাল দখল করে চলেছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার লোকেরা জানান, খাল দখলের বিষয়টি একাধিকবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হলেও তিনি নানা কথা বলে পাশ কেটে যাচ্ছেন।
কালীকচ্ছ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. তকদির হোসেন জানান, খাল দখলে বাধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রভাবশালী দখলদাররা সেই বাধা মানছে না। প্রতিদিন ট্রাক্টর ও ড্রেজার দিয়ে মাটি ফেলে খাল দখল করে চলেছে তারা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষকে জানানো হলেও তারাও অজানা কারণে নীরব।
বিশুতারা গ্রামের ইউপি সদস্য মো. ফজল ইসলাম জানান, সরাইল-অরুয়াইল সড়কের পাশে বিশুতারা গ্রাম এলাকায় একাধিক ট্রাক্টর দিয়ে মাটি ফেলে খাল ভরাট করছে গ্রামের মৃত আব্দুল বারিকের ছেলে আব্দুর নূরসহ অন্যরা। খাল দখলে তারা কোন বাধাই মানছে না। বিষয়টি স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তিনি এসে খাল দখলের প্রতিযোগিতা দেখেও গেছেন।
স্থানীয় সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যা আনোয়ারা বেগম জানান, বিশুতারা এলাকায় গত ক’বছর আগে এ খালের উপর প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হয়। গ্রামের মৃত সহিদ মিয়ার ছেলে মো. ইসকান্দর মিয়াসহ অন্যরা ব্রীজের দু’পাশ মাটি দিয়ে ভরাট করে খাল দখল করে চলেছে। এতে এলাকার লাঠিয়াল লোকেরা মদদ দিয়ে যাচ্ছেন। তবে আব্দুর নূর, ইসকান্দরসহ অন্য দখলদারদের দাবি, এ খাল মাটি দিয়ে ভরাট করাতে পাশের রাস্তা মজবুত হচ্ছে। এতে সরকারের লাভই বেশি। প্রয়োজনে তারা খালের মাটি সরিয়ে নিবেন বলেও দখলদার অনেকে জানান।
এদিকে বিশুতারা গ্রামের বাসিন্দা মো. হরমুজ আলী মাস্টার জানান, এভাবে খাল দখলের কারণে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। কৃষক আনছর আলী (৬৫), সহিদ মিয়া (৪০), বুলবুল মিয়া (৫০) জানান, এ খাল ভরাটের কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে এলাকার ফসলি মাঠের শত শত একর জমির চাষাবাদে বিঘœ ঘটবে। গ্রামের হামিদা বেগম (৬০) জানান, তারা (দখলদার) টাকার জোরে এ খাল দখলে নিয়ে মাটি ফেলে ভরাট করে যাচ্ছেন। আর সরকারের লোকেরা এসে শুধু দেখেই যাচ্ছেন। এতে কোন বাধা দিচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে কালীকচ্ছ ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন জানান, খাল দখলের দৃশ্যটি তিনি নিজে সরেজমিন দেখে এসেছেন। লিখিতভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানোও হয়েছে। উপজেলায় এসিল্যান্ড নেই। তাই নির্বাহী কর্মকর্তা এর দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি বিষয়টি দেখছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিছুজ্জামান খাঁন জানান, খাল দখলের বিষয়টি জেনেছি। অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।

Check Also

কুমিল্লায় তিন গৃহহীন নতুন ঘর পেল

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ– কুমিল্লা সদর উপজেলায় গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে ৪নং আমড়াতলী ইউনিয়নের গৃহহীন নুরজাহান বেগম, ...

Leave a Reply