ওই নরপশু পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে এ বিজয়
রক্তস্নাত লাশ-মা-বোনের সম্ভ্রমের অবিনশ্ব^র জয়,
ত্যাগ-তিতিক্ষা আত্মবিসর্জনে লালসাগর পেরিয়ে
সেইদিন আন্দোলিত হয় সবপ্রাণ জয়ের শিহরণে।
বাঙালির দেশমাতৃকা ও জাতির অস্তীত্বের লড়াই
জ্বলে উঠে তাদের বিরুদ্ধে যারা করেছে বড়াই,
সেদিন বাঙালিরা কাঁপায় বিশ্ব ধৈর্য আর সাহস দিয়ে
বিশ্ববাসী অবাক হয়েছিল এ মহান বীরত্ব দেখে।
সেদিন ধর্ম-বর্ণ ভেদাভেদ ভুলে রেখে কাঁদে কাঁদ
অসম্ভবকে সম্ভব করেছিল আবালবৃদ্ধবনিতা বাংলার,
নিজেদের মধ্যে তারা দ্বন্দ্ব-সংঘাত লাগিয়ে আগুন
পারেনি জাতিকে কলঙ্কিত করতে ওই কুচক্রিমহল ।
সেদিন সকল পৈশাচিকতার জাল ছিন্ন করে এ জাতি
ছিনিয়ে আনেন স্বমহিমায় বাংলার এ বিজয়ের সুখ্যাতি,
সবুজ বাংলার নিরপরাধ কোমল ত্রিশলক্ষ তাজা প্রাণ
ধুলোয় লুটোপুটি খায় সেদিন মায়ের জাত নারীর সম্ভ্রম।
বীরের জাতি-বাঙালি জাতি মা-মাটিকে ভালোবেসে
এ জয় ছিনিয়ে আনে পাক হায়েনাদের বিরুদ্ধে,
সর্বঐক্য, খাঁটি দেশপ্রেম, নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ
বাঙালি জাতির এ মহান বিজয় মহান অর্জন।
পরক্ষণে এ অর্জন-বিজয় নিয়ে শুরু হয় ছিনিমিনি
যে যার মতো বেপরোয়া হয়ে করে বিকিকিনি,
দম্ভ আর ক্ষমতার মোহে দেশকর্ণধাররা হয়ে অন্ধ
নিজেরাই নিজেদের সঙ্গে শুরু করে ছলচাতুরি-দ্বন্দ্ব।
দেশের চেয়ে ব্যক্তি-গোষ্ঠীর স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে
হেনহীন কাজ নেই যা তারা করিনি ক্ষমতার লোভে!
রাজনীতির নামে কথিত উচ্চশ্রেণীর ব্যক্তি-গোষ্ঠী
সর্বনাশ করেছে আমাদের-লজ্জিত হয়েছে এ জাতি।
রাজনীতির যাঁতাকলে পিষ্ট-নিস্পেষিত আমাদের বিজয়
ক্ষমতা ও আদিপত্যের মোহে ভূলন্ঠিত হয় মহান জয়,
শাসকগোষ্ঠী ও রাজনৈতিকদের চরম বৈরীতা-হীনতা
সৃষ্টি হয় সমস্যা ধীরে ধীরে দেশের বাজে বারোটা।
তারা করছে অন্ধ জাতিকে ভুল ইতিহাস শিক্ষা দিয়ে
রাজনৈতিক গোষ্ঠীরা করে ব্যবসা ‘রাজনীতির নামে,
ধারাবাহিক অপচর্চা চলছে এ দেশে বছরের পর বছর
বিশৃঙ্খলা করে জাতির ললাটে দিয়েছে কলঙ্কের দাগ।
ক্ষমতায় যায় যারা সন্ত্রাস ও অনৈকিতার পথ ধরে
তারাই আমাদের মহান অর্জনগুলোকে দেয় ম্লান করে,
নিজেদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে করে পাঁতারা
বিরোধী দলও ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য হয় বেপরোয়া।
তাদের দেখাদেখি দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দল
ভ্রান্তপথে ধাবিত হয়ে পদদলিত করে দেশের সম্পদ,
তারা অপরাজনীতির চর্চায় পতাকাকে করে অসম্মান
রাজনীতির ‘র’ বোঝে না যারা তাদেরই দাপট এখন।
এখনও সময় আছে আর নয় হানাহানি-খুনখারাবি
দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এক হয়ে এসো কাজ শুরু করি,
পিছনের সবকিছু ভুলে এক পতাকা তলে হয়ে সমবেত
নিজেরা বাঁচুন, আমাদের বাচাঁন, বাঁচান দেশ-জাতি।
মো. আলী আশরাফ খান
দাউদকান্দি, কুমিল্লা।