ব্রাহ্মণবাড়িয়া / ২৩ নভেম্বর (কুমিল্লাওয়েব ডটকম)———
কে হচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ ও সদরের কিছু অংশ) আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী এ নিয়ে সর্বত্র জল্পনা কল্পনা। এখন পযন্ত অন্তত পাঁচজনের নাম শুনা যাচ্ছে। এছাড়া হত্যাকান্ডের শিকার ইকবাল আজাদের পরিবার থেকেও কেউ প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
তবে ইকবাল আজাদ হত্যাকান্ডের ঘটনায় সরাইলে এখনো শোকাবহ পরিবেশ বজায় থাকায় কেউ সামনে এসে প্রচারনা চালাচ্ছেন না। অন্তত পাঁচজন প্রার্থী আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। ঈদের পূর্বে শুভেচ্ছা জানিয়ে অনেকের লাগানো পোস্টারই সে কথা জানান দেয়।
আগামী নির্বাচনে এ আসন থেকে জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মেজর (অব.) জহিরুল হক খান (বীরপ্রতীক), ধানমন্ডি থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন আহামেদ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও শিক্ষক নেতা মো. শাজাহান আলম সাজু, আশুগঞ্জের বাসিন্দা সাবেক যুগ্ম-সচিব মো. ইসহাক ভূইয়া, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা শাহ মো. মফিজ মনোনয়ন চাইতে পারেন। তবে নিহত ইকবাল আজাদের পরিবার থেকে কেউ প্রার্থী হলে আওয়ামীলীগ সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে বলে দাবি করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বাধীনতার পর এই আসনে ৭৩’ সালে তাহের উদ্দিন ঠাকুর প্রথমবার আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর থেকে এ আসনটি আওয়ামীলীগের অধরাই থেকে যায়। মাঝে দু’বার জাতীয় পার্টি, তিনবার বিএনপি’র উকিল আব্দুর সাত্তার ভূইয়া, একবার চারদলীয় ঐক্যজোট এবং সর্বশেষ ২০০৮ এর নির্বাচনে মহাজোট থেকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা নির্বাচিত হন। এবারও মহাজোটের ঐক্য বজায় থাকলে জিয়াউল হক মৃধা প্রার্থীতা দৌঁড়ে এগিয়ে থাকবেন।
সরাইল উপজেলা যুবলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক অ্যাডভোকেট আশরাফ উদ্দিন মন্তু বলেন, ‘নিহত জনপ্রিয় নেতা ইকবাল আজাদের পরিবারের কেউ মনোনয়ন পেলেই কেবল আওয়ামীলীগ এ আসন ফিরে পেতে পারে। আমরা পরিবারের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছি যে, তাঁর স্ত্রী অথবা ভাই আওয়ামীলীগের মনোনয়ন চাইবেন’। তিনি বলেন, ’জাতীয় পার্টির এম.পিকে জিম্মি করে আওয়ামীলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা টিআর ও কাবিখা হরিলুট করেছেন বলে সরাইলে আওয়ামীলীগের দুরাবস্থা বিরাজ করছে’।
শিক্ষক নেতা শাহজাহান আলম সাজু বলেন, ’ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে আমার শুরু। আমার ওপর বিশ্বাস রেখেই প্রধানমন্ত্রী শিক্ষক-কর্মচারি কল্যান ট্রাস্টের দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি আমাকে এলাকায় কাজ করতে বলেছেন। আমিও প্রধানমন্ত্রীকে আমার ইচ্ছার কথা জানিয়েছি। এখন তিনি যেভাবে বলবেন সেভাবেই এগিয়ে যাব’।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মেজর জহিরুল হক খান বলেন, ’জনপ্রিয় নেতা ইকবাল আজাদ খুনের ঘটনায় মানুষ স্তম্ভিত হয়ে আছে। আমরা সেখানকার দলের কার্যক্রম স্থগিত করে বিলুপ্তের জন্য কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। আশা করি কয়েকদিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত আসবে। এরপর এ বিষয়ে সার্বিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে’। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ’আমি এ আসন থেকে আগেও প্রার্থী হই। এবারো মনোনয়ন চাইব’।
প্রসঙ্গত, গত ২১ অক্টোবর রাজনীতির প্রতিহিংসার বলি হয়ে প্রাণ হারান উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এ কে এম ইকবাল আজাদ। এ ঘটনায় আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হালিম, রফিক উদ্দিন ঠাকুর, মাহফুজ আলীকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়।
আরিফুল ইসলাম সুমন