চান্দিনা / ১৮ নভেম্বর (কুমিল্লাওয়েব ডটকম)———-
চান্দিনা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মার্কেটের ভাড়া আদায় কালে বাঁধা প্রদান করেছে কতিপয় ব্যবসায়ী।রবিবার সকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা হারুন মাহমুদ চারজন সহকারী শিক্ষক নিয়ে ভাড়া আদায় করতে গেলে মার্কেটের ভাড়াটিয়া চান্দিনা পৌরসভার মেয়র ও চান্দিনা পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. আলমগীর খান, অপর ব্যবসায়ী হরিচরণ শীল, শহিদুল্লাহ্, তৌফিক, আবুল কালামসহ ব্যবসায়ীরা সন্ত্রাসী কায়দায় ভাড়া আদায়ে বাঁধা প্রদান করে। এসময় তারা শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণ করে। ওই ঘটনার পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয়ের কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি মো. জাকির হোসেন এর বরাবর ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। লিখিত অভিযোগে ভাড়াটিয়াদের অনুকুলে বরাদ্দকৃত দোকান বাতিল করার জন্যও আবেদন জানানো হয়। এদিকে ভাড়া কমানোর দাবিতে ওই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা গতকাল রবিবার সকাল থেকে রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দোকান বন্ধ করে রাখে।
এদিকে ওই ঘটনার পর বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিদ্যালয়ের কার্যনিবার্হী কমিটির অভিভাবক সদস্য ও চান্দিনা পৌর যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মনির খন্দকার। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের কার্যনির্বাহী কমিটি গত ১৩ আগস্ট’১২ইং তারিখের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেন- সেপ্টেম্বর মাস থেকে দোকান প্রতি ১হাজার ২শত টাকা করে মাসিক ভাড়া এবং এডভান্স হিসেবে ১ লাখ টাকা দিতে হবে। কিছুসংখ্যক ব্যবসায়ী ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভাড়াও প্রদান করেছে। গতকাল রোববার সকালে অন্য ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া উত্তোলনের জন্য গেলে ৮ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ভাড়া আদায়ের পর পৌরসভার মেয়র শাহ্ মো. আলমগীর খান কতিপয় ব্যবসায়ী ও ভাড়াটিয়া নিয়ে শিক্ষকদের উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে তর্কবিতর্ক ও শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণ করেন তারা। তিনি আরও বলেন, একজন মেয়র হয়ে শিক্ষকদের সাথে এ ধরনের আচরণ করায় আমরা হতবাক হয়েছি। আমরা ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
অপরদিকে গতকাল সরজমিনে ওই মার্কেটের আশেপাশে অবস্থিত ব্যক্তি মালিকানা মার্কেটে খবর নিয়ে জানাগেছে, ওই এলাকায় দোকান প্রতি ২-৩ লাখ টাকা এডভান্স এবং ২-৩ হাজার টাকা ভাড়া প্রদান করছে ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এই এলাকায় অবস্থিত চান্দিনা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মার্কেটের ভাড়া এত কম হওয়ার কারণ আদৌও অজানা।
এ ব্যাপারে চান্দিনা পৌর মেয়র শাহ্ মো. আলমগীর খান জানান, দোকান প্রতি আগে ৭ শত টাকা ভাড়া নেওয়া হতো। আগস্ট মাসে হঠাৎ করে ৫ শত টাকা ভাড়া বাড়িয়ে ১ হাজার ২ শত টাকা করা হয়। যা অনেক ব্যবসায়ীদের পক্ষে দেওয়া অসম্ভব। ভাড়া কমানোর জন্য আমরা ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত আবেদন করি। কিন্তু কোন লাভ হয় নি। ঘটনার সময় আমি পৌর কার্যালয়ে ছিলাম। ব্যবসায়ীদের কছ থেকে জোর করে ভাড়া আদায় করছে এমন খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যবসায়ীদের শান্ত করি। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দোকান তালা দিতে আসলে সকল ব্যবসায়ীরা স্বেচ্ছায় দোকান তালা দিয়ে চাবি বিদ্যালয় কতৃপক্ষের কাছে জমা দেয়।
এ ব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয়ের কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি মো. জাকির হোসেন জানান, ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক হয়েছে। আশাকরি আগামী দিন (১৯ নভেম্বর) সোমবার এ বিষয়ে সূরাহা হয়ে যাবে ।
মাসুমুর রহমান মাসুদ, চান্দিনা।