ব্রাহ্মণবাড়িয়া / ৯ নভেম্বর (কুমিল্লাওয়েব ডটকম)———-
নিজ দলের নেতা খুনের দায়ে পলাতক সদ্য বিলুপ্ত উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ অন্য নেতা-কর্মীদের আদালত জামিন দিলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলবাসী তাদের জামিন দেবেন না। ইকবাল আজাদ খুনের সঠিক পূর্ণাঙ্গভাবে বিচার না হলে, সরাইলের মানুষ এ বিচার নিজের হাতে তুলে নেবে। প্রয়োজনে এখানকার প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করা হবে।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে সরাইল নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে স্থানীয় কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। এসময় সমাবেশে উপস্থিত হাজারো বিক্ষুব্ধ জনতা শ্লোগান দিয়ে বক্তাদের এসব কথায় তারাও একাত্মতা ঘোষণা করেন। সংগঠনের সভাপতি ইয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মনির উদ্দিন আহমেদ, আওয়ামীলীগ নেতা হাজী আব্দুর রাশেদ, হাজী ইকবাল হোসেন, নিহত ইকবাল আজাদের ভাই জাহাঙ্গীর আজাদ, আশরাফ উদ্দিন মন্তু, শের আলম, জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উপজেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি রফিকুর রহমান সহ আরো গণ্যমান্য নেতৃবৃন্দ। সভায় বক্তারা আরো বলেন, ইকবাল আজাদ খুনের ঘটনায় সরাইল থানার তৎকালীন ওসির ভূমিকা ছিল অত্যন্ত রহস্যজনক। বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, পুলিশ প্রশাসনে ‘কুলাঙ্গার’ ওসি গিয়াস উদ্দিনের মতো কোন ওসি যেন বাংলার মাটিতে পুলিশের পোশাক আর না পড়ে। সমাবেশে অভিযোগ করা হয়, মহাজোট এম.পি জিয়াউল হক মৃধার সাথে এই মামলার প্রথম সারির আসামী ততকালিন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধরণ সম্পাদকের ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। তাই তাদের গ্রেপ্তারে তিনি প্রশাসনকে তাগিদ দিচ্ছেন না। ’বক্তারা উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম থেকে রফিক উদ্দিন ঠাকুরকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, উপজেলায় যেসব কর্মকর্তা খুনী রফিক উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে কাজ করবেন তাদেরও ক্ষমা করা হবে না। সমাবেশ শেষে ইকবাল আজাদের খুনিদের গ্রেপ্তার দাবিতে মিছিল বের করা হয়। মিছিল শেষে বিক্ষুব্দ জনতা উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে লাগানো উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুরের নাম ফলক ভেঙ্গে ফেলেন। এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উদ্ভোধনের সময়, সরাইল-অরুয়াইল সড়ক এবং উপজেলা পরিষদের তোরণে লাগানো তার নাম ফলক শাবল দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া।
উল্লেখ্য, গত ২১ অক্টোবর নিজ দলের লোকদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল আজাদ। এ ঘটনায় দলের সভাপতি আব্দুল হালিম, সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, যুগ্ম সম্পাদক ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর জব্বার, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজ আলীসহ ২২ নেতা-কর্মীকে আসামি করে থানায় মামলা করেন নিহতের ছোট ভাই জাহাঙ্গীর আজাদ।
আরিফুল ইসলাম সুমন