তিতাস / ৩ নভেম্বর (কুমিল্লাওয়েব ডটকম)———-
তিতাসের আন্ডার গ্রাউন্ডের গডফাদার কালাচান্দকান্দি গ্রামের ফরিদ মিয়া ছেলে নাছির ও তার বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে কলাকান্দিবাসী ও কলাকান্দি বাজারের দু’শতাধিক ব্যবসায়ী। শুক্রবার ও শনিবার দু’দিন ব্যাপী নাছির বাহিনীর অত্যাচারে আতংকে দিন কাটাচ্ছে শত শত নারী-পুরুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুক্রবার দুপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নাছির বাহিনীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র-সন্ত্রে সজ্জিত হয়ে কলাকান্দি গ্রামের বাচ্চু মিয়ার মুদি দোকান, ছাদেক ব্যাপারী, কামাল মিয়া, আঃ আউয়াল, আবুল কাশেম, আবদুল মালেক ও সখিনার বসতঘর ভাংচুর করে মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায় কলাকান্দি ও কালাচান্দকান্দি গ্রামের মোঃ খলিল মিয়া (৪৭), মোঃ নজরুল ইসলাম ওরফে নজু মিয়া (৪০), মোঃ রাসেল মিয়া (২৮), মোঃ মহিন মিয়া (১৮), কাউছার আহমেদ (২০), বাচ্চু মেম্বার (৫০), আহাদ হোসেন (৪৫), মিন্টু মিয়া (৫২), পারভেজ হোসেন (২০), আজিজুল হক (৫০), আনিছ মোল্লা (৫২), রব মিয়া (৫৫) ও কবির হোসেন (৫১) আহত হয়। আহতদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থানা পুলিশ প্রকাশ্যে নাছির বাহিনীর পক্ষে ভূমিকা পালন করলে কলাকান্দিবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে অর্ধশতাধিক মহিলা অভিযোগ তুলেন, পুলিশ আসার পর তাদের উপস্থিতিতে নাছির বাহিনীর লোকজন বাড়ী-ঘর ভাংচুর করে লুটপাট চালায়। সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল থেকে ফিরে স্থানীয় সাংবাদিকরা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে আন্ডার গ্রাউন্ডের গডফাদার নাছির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে গোপন বৈঠক করতে দেখা যায়। আধাঘন্টা পর নাছির বের হয়ে সাংবাদিকদেরকে দেখে উত্তেজিত হয়ে কটাক্ক করে কথা বলে তাৎক্ষণিক সাংবাদিকরা প্রতিবাদ করলে তার সাথে থাকা বাবুল বলে দাদা তারা আমাদের ছবি তুলে এনেছে তখন নাছির ক্ষিপ্ত হয়ে তিতাস প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও উক্ত প্রতিবেদকের হাত থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়। এসময় সাথে থাকা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন প্রতিবাদ করলে তিতাস থানার এস.আই শহীদুল ইসলাম ও এ.এস.আই নজরুল ইসলাম বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত থানা চত্ত্বরে গডফাদার নাছির ও তার বাহিনীর উপস্থিতি ছিল দৃশ্যমান।
এদিকে শনিবার সকালে পুলিশ কলাকান্দি বাজারে গেলে নাছির বাহিনীর লোকজন পুলিশের সহযোগিতায় কলাকান্দি গ্রামের লোকজনদের উপরে হামলা চালিয়ে আক্তার হোসেন ও আমির হোসেনকে গুরুত্বর আহত করে। এসময় সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দিক-বেদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। পরে স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে, পুলিশের উপস্থিতিতে এলাকাবাসী জানান, থানা পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে নাছির বাহিনী দ্বিতীয় দফা ত্রাস সৃষ্টি করেছে এবং শুক্রবার রাতে নাছির বাহিনীকে সাথে নিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কলাকান্দি গ্রামবাসীকে অকত্য ভাষায় গালমন্দ করেছে। নাছির দীর্ঘদিন যাবৎ তার বাহিনী দিয়ে কয়েকদিন পর পর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছে বলেও এলাকাবাসী অভিযোগ তুলে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বাজারে এক ব্যবসায়ী বলেন, সন্ত্রাসের গড ফাদার নাছির এলাকায় এসে বলে এসপি, সার্কেল এসপি ও তিতাস থানা আমার কথায় উঠে-বসে। নাছির বাহিনীর কারণে দু’দিন যাবৎ বাজারের দু’শতাধিক দোকানের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। তিতাসের আন্ডার গ্রাউন্ডের গডফাদার সন্ত্রাসী নাছির বাহিনীর অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে কলাকান্দিবাসী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
নাজমুল করিম ফারুক
তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধি