ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক সংঘর্ষ একজন খুন আহত ৯০ : ভাঙচুর-লুটপাট

ব্রাহ্মণবাড়িয়া / ১ নভেম্বর (কুমিল্লাওয়েব ডটকম)———-
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক সংঘর্ষে ইমাম হোসেন (৭০) নামে এক ব্যক্তি খুন সহ অপর ৯০জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত ৭-৮টি বাড়িঘরে ভাঙচুর লুটপাট চালিয়েছে দাঙ্গাবাজরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জেলার কসবা উপজেলার মূলকগ্রাম ইউনিয়নের নেয়ামতপুর গ্রামের বাচ্চু মহাজনের গোষ্ঠীর রতন মহাজন ও সরকার বাড়ির তাজু মিয়ার লোকদের মধ্যে জমি নিয়ে এবং বুধবার সন্ধ্যায় জেলার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের রানিদিয়া গ্রামের সাহেব গোষ্ঠী ও মুন্সী গোষ্ঠীর লোকদের মধ্যে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কসবা উপজেলার নেয়ামতপুর গ্রামের বাচ্চু মহাজনের গোষ্ঠীর রতন মহাজন ও সরকার বাড়ির তাজু মিয়ার মধ্যে ৫ শতাংশ বাড়ির জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের মহিলাসহ কমপক্ষে ৪০জন আহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে দাঙ্গাবাজরা ৭-৮টি বাড়িঘরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে আহাম্মদ মিয়া (২২), পারভেজ মিয়া ২৫), সাফিন আহমেদ (৫০), দেলোয়ার হোসেন (১৯), বাদশা মিয়া (৩৫), ইমাম হোসেন (৭০), জসিম উদ্দিন (৪৫), শাহপরান (৩২), নাঈম উদ্দিন (২২), বশির আহমেদ (৩৫), আবু তাহের (৪০), দানু মিয়া (৩৫), সমরাজ মিয়া (৩০), মুক্তা বানুকে (৪০) জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আশংকাজন অবস্থায় ইমাম হোসেন, দানু মিয়া, সাফিন ও সমরাজকে ঢাকায় প্রেরন করা হয়। পথিমধ্যে ইমাম হোসেন (৭০) মারা যায়। জানতে চাইলে কসবা থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মো. বদরুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এই প্রতিবেদককে জানান, ‘জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে একই এলাকার দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। মোতায়েন করা রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। তবে এই বিষয়ে কোনো পক্ষই মামলা দায়ের করেনি।’
এদিকে সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের রানিদিয়া গ্রামের সাহেব গোষ্ঠীর মোহাম্মদের কাছ থেকে গত ছয়মাস আগে ৪৫ শতাংশ বাড়ির জায়গা ৩০ লাখ টাকায় ক্রয় করেন ইসরাইল মুন্সী গোষ্ঠীর আব্দুল্লাহ মিয়া। বাড়ির জায়গা হস্তান্তন নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে গত বুধবার সন্ধ্যায় উভয় পক্ষের কয়েক শতাধিক লোক দা, বল্লম, কিরিচসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। টানা দুই ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। আহতদের মধ্যে তাজুল ইসলাম (২৫), কুদ্দুস মিয়া (৩৫), ইব্রাহিম মিয়া (৩০), শাহ মিয়া (৩৬), জহির ইসলাম (২০), ইব্রাহিম হোসেন(৩৮), রফিকুল ইসলাম (২২), আক্কাস মিয়া (২৫), শাহিন মিয়া (২২), আবদুল কাদের (২২), সালেক মিয়া (২০), আলী আকবর (৪০), বায়েজিদ (১৮), উমর (৪০), শাহেদুল ইসলাম (২৩), বাবুল মিয়া (২১), ইব্রাহিম উদ্দিন (৪০), মানিক মিয়া (১৪), আকরাম হোসেন (২৫), নুরুজ্জামান (২৫), আউয়াল উদ্দিন (৩৫), সোহেল রানা (২৪), জামান মিয়া (২৭), সেলিম মিয়া (২৮), আলামিন (২৪) ও আবদুল আলীমকে (৩২) ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সরাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) উত্তম কুমার চক্রবর্তী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে।’

Check Also

কুমিল্লায় তিন গৃহহীন নতুন ঘর পেল

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ– কুমিল্লা সদর উপজেলায় গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে ৪নং আমড়াতলী ইউনিয়নের গৃহহীন নুরজাহান বেগম, ...

Leave a Reply