কুমিল্লা / ২৩ অক্টোবর (কুমিল্লাওয়েব ডটকম)———-
কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) নির্বাচনী এলাকায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের একক প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা যায়। তবে জামায়াতে ইসলামীর এ সিদ্ধান্তের কারনে তৃনমূল নেতা-কর্মীদের মাঝে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, কুমিল্লায় যে সকল উপজেলা গুলো জামায়েতের ঘাটি হিসেবে ধরা হয়, তার মধ্যে চৌদ্দগ্রামের পরেই দেবিদ্বার উপজেলার নাম তালিকায় রয়েছে বলে জানা যায়। কেন্দ্রীয় ভাবে বিএনপি-জামায়াত জোটবদ্ধ হওয়ার কারনে গত ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেবিদ্বার থেকে বিএনপি দলীয় সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীকে এবং ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আইনী জটিলতায় নির্বাচন করতে না পারায় তার ন্ত্রী বেগম মাজেদা আহসান মুন্সীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। ৮ম ও ৯ম এ দুটি জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিকে জামায়াত ছার দেওয়ায় আগামী ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত জোটের কাছে এ আসনটি দাবী করবে বলে সূত্র জানায়। তাই গত মাসে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য অধ্যাপক আবদুর রব এর উপস্থিতিতে উপজেলা জামাতের সুরা ও কর্ম পরিষদের বৈঠকে জামায়াতের উপজেলা সেক্রেটারী মু. সাইফুল ইসলাম শহীদকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের খবর তৃনমূল নেতা-কর্মীদের মাঝে পৌছলে নেতা-কর্মীরা হতাশ হয়ে পরেন। কারন দীর্ঘদিন ধরে শোনা যাচ্ছিল ব্যারিষ্টার আবু বকর ছিদ্দিক ও রিলায়েন্স গ্র“পের এমডি, শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আবু সাঈদ মোঃ ফারুক এর নাম। উপজেলা জামায়াত ঠিক দুই বছর আগে ওই সাইফুল ইসলাম শহীদকে দেবিদ্বার পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কমিশনার প্রার্থী হিসেবে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন রকমের পোষ্টার, ফেষ্টুন, ব্যানার ও ষ্টিকার করে প্রচারনা চালায়। গত রমজান ঈদে পৌর এলাকার ৫ নং ওয়ার্ড বাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ব্যাপক প্রচারনা চালায় সাইফুল ইসলাম শহীদ এবং জামায়াতের নেতা-কর্মীরাও ওই প্রচারনায় অংশ গ্রহন করেন। ওই কয়েক দিনের ব্যবধানে সাইফুল ইসলাম শহীদকে পৌর কমিশনার প্রার্থী বাতিল করে নাটকীয়তার মধ্যদিয়ে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী করার সিদ্ধান্তে তৃনমূল নেতা-কর্মীরা হতাশ ও ক্ষুব্দ হয়ে পরেন।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জামায়াত কর্মী জানান, সাইফুল ইসলাম শহীদ পৌর সভার নির্বাচনে কমিশনার প্রার্থী হিসেবে পাশ করতে পারেকিনা তা নিয়েই সন্দেহ, সেখানে তাকে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত আসলই দুঃখজনক। শিবিরের এক সাবেক নেতা জানান, জামায়াতের মজলিশে সুরার সিদ্ধান্তের বাহিরে কথা বলার নিয়ম না থাকার কারনে কেউ প্রকাশ্যে কথা বলছেনা। সাইফুল ইসলাম শহীদ দেবিদ্বার পৌর এলাকার চেয়ারম্যান বাড়ি মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে। তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের কুমিল্লা উত্তর ও কুমিল্লা দক্ষিন জেলার সাবেক সভাপতি ছিলেন।
শিবিরের উপজেলা সভাপতি মোঃ কামাল হোসেন সরকার জানান, সাথী সদস্যদের কে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই করার জন্য ভোট দিতে বললে আমরা ভোট প্রদান করি। কিন্তু প্রার্থী বাছাইয়ের বিষয়টি সম্পূর্ন জামায়াতের। একজন কমিশনার প্রার্থীকে নাটকীয় ভাবে জাতীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী করার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি কোন প্রকার মন্তব্য করবো না।
পৌর জামায়াতের আমীর মনিরুল আলম পাঠান জানান, জামায়াতের রোকন, শিবিরের সাথী সদস্যদের ভোটের প্রেক্ষিতে উপজেলা সুরা ও কর্ম পরিষদের বৈঠকে সাইফুল ইসলাম শহীদকে পৌর কমিশনার প্রার্থী বাদ দিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আবদুস ছালাম জানান, কেন্দ্রীয় সংগঠনের নির্দেশনার আলোকে জামায়াতের ৭৫জন রোকন ও শিবিরের প্রায় ৩০০জন সাথী সদস্যদের মতামতের বিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিনি আরো জানান, গত দুই বছর আগে সাইফুল ইসলাম শহীদকে পৌর কমিশনার প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সংগঠন। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে তাকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
Check Also
দাউদকান্দিতে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু
হোসাইন মোহাম্মদ দিদার :কুমিল্লার দাউদকান্দিতে শান্তা বেগম (২৪) নামে এক গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ...