ব্রাহ্মণপাড়া / ৯ অক্টোবর (কুমিল্লাওয়েব ডটকম)———-
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিউমুনিয়া রোগীর প্রাদূর্ভাবে বাচ্চা ও বৃদ্ধরা মেঝেতে বিছানা করে চিকিৎসর নিচ্ছে, অথচ পাশেই দুই বছর যাবত ধরে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে নব নির্মিত ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবন। ২০০৯ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করতে পাঁচ কোটি টাকা ব্যায়ে ১৯ শয্যা বিশিষ্ট একটি পূর্নাঙ্গ তিনতলা হাসপাতাল ভবন নির্মানের কাজ শুরু হয়। ২০১০ সালে ভবন নির্মানের কাজ শেষ হওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক হস্তান্তর করা হয়। দুই বৎসর অতিবাহিত হওয়ার পরও উদ্বোধন না হওয়ায় ৫০ শয্যার স্থলে ৩১ শয্যার সেবা পাচ্ছে উপজেলার ৩ লক্ষ মানুষ। রোগীদের চাপ বেশী থাকায় হাসপাতালের মেঝেতে বিছানা করে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছে শিশুসহ অন্যান্য রোগীরা। এতে একদিকে উপজেলাবাসী স্বাস্থসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, অন্যদিকে পড়ে থেকে অযত্নে অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে ৫ কোটি টাকায় নির্মিত সরকারী সম্পদ ভবনটি। ৩১ শয্যার বর্তমান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাথে ১৯ শয্যার নতুন এই ভবন চালু হলে ৫০ শয্যা হাসপাতালের কার্যক্রম চালু হতো। এরফলে মেডিসিন, সার্জারী, চর্ম ও যৌন রোগ, গাইনী, শিশু, চক্ষু, নাক কান গলা ও আর্থপেডিক বিভাগে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পদায়ন করা হতো। এছাড়াও অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটারের মাধ্যমে যেকোন অস্ত্রোপচার করা যেতো। উপকৃত হতো এলাকার জনগন, অল্প টাকায় পেতো স্বাস্থ্য সেবা। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষ গুলো নিজেদের চাষাদাদের জমি, ভিটি বাড়ী, বিক্রি করে কুমিল্লা কিংবা ঢাকায় যেতে হয়। এতে করে শুধু তাদেরি কষ্ট হয় তা নয়, কুমিল্লা শহড়ের ডাক্তারদের রোগীর চাপও বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। গুরুত্বপূর্ন ৩৪টি পদ খালী রয়েছে। এর মধ্যে মেডিক্যাল অফিসার নেই, আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার নেই, সহকারী ডেন্টাল সার্জন নেই, ৪জন সহকারী সার্জনের পদ শূন্য রয়েছে। এনেসথেসিয়া ডাক্তার জনবলে থেকেও ২০০৩ সাল থেকে প্রেষনে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজে কর্মরত রয়েছেন। এখানে কোন অস্ত্রোপচার করা হয়না। ডেন্টাল সার্জন ও ডেন্টাল চিকিৎসা দেওয়ার মত কোন যন্ত্রপাতি নাই। একমাত্র এক্ররে মেশিন ও জেনারেটর দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। সরেজমিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, গতকাল সোমবার (৮ অক্টোবর) ৪৯ জন রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে নিওমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে উনিশ জন শিশু ভর্তি আছে। শয্যার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হওয়ায় হাসপাতালের মেঝেতে এসব শিশুদের রাখা হয়েছে। মেঝেতে থাকা উপজেলার চান্দলা গ্রামের জহির মিয়ার মেয়ে জান্নাত ৩ বছর, বেজুরা গ্রামের আজিজ মিয়ার মেয়ে তানজিনা ১১ মাস সহ অনেকে এ’প্রতিনিধির নিকট ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দায়িত্বরত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো: আবু জাহের বলেন, নব নির্মিত ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির নতুন ভবন উদ্বোধন হলে রোগীদের চাপ কমে যেত। ভর্তিকৃত রোগীদের চাপ সামলাতেই বাধ্য হয়েই মেঝেতে রাখতে হয়। নব নির্মিত হাসপাতালের উদ্বোধন করে পরিপূর্ন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জোর দাবী এলাকার আপামর জনসাধারনের।
Check Also
দাউদকান্দিতে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু
হোসাইন মোহাম্মদ দিদার :কুমিল্লার দাউদকান্দিতে শান্তা বেগম (২৪) নামে এক গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ...