ব্রাহ্মণবাড়িয়া / ৪ অক্টোবর (কুমিল্লাওয়েব ডটকম)———-
দেশের দীর্ঘ নৌ ও সড়ক পথ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ আর্ন্তজাতিক নৌবন্দর ব্যবহার করে পার্শ্ববতী দেশ ভারত হাজার হাজার টন পণ্য পরিবহন করছে কিভাবে স্থানীয় সংসদ সদস্য হিসেবে আমি নিজেই তা জানিনা, জনগণ জানবেন কিভাবে। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো চিঠি দিয়ে কিংবা মৌখিকভাবেও তারা আমাকে কিছুই জানায়নি।
বৃহস্পতিবার ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের কাছে এ কথাগুলো বলছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য জাপার কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা। তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা আশুগঞ্জ নৌবন্দর দিয়ে ভারতকে ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। অথচ এ বিষয়ে আমাকে কিছুই জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি সংশ্লিষ্টরা। কয়েকদিন পর পর ভারতীয় প্রতিনিধি দল আশুগঞ্জ নৌবন্দর পরিদর্শনে আসেন। নৌবন্দর উন্নয়নে প্রকল্পও গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু এই এলাকার সাংসদ হয়েও এসব কর্মকান্ড থেকে আমাকে দূরে রাখা হচ্ছে। অতি-গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে ট্রানজিট বা ট্রান্সশিপমেন্ট কার্যক্রম চলছে। মহাজোটের এই এমপি প্রশ্ন তুলেন, ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার বিষয়টি গোপন রাখার রহস্য কি। ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির সব বিষয় এ দেশের মানুষকে অবগত করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে ভারতকে ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দিতে আওয়ামী লীগ সরকার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে অভ্যন্তরীন কন্টেইনার নৌবন্দর স্থাপন করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এর জন্য প্রায় ২৪৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিস্ট সূত্র জানায়, গত ৪ জানুয়ারীর মন্ত্রী পরিষদ (একনেক) বৈঠকে এই প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। অর্থ ছাড় পেলেই দ্রুত এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিক এই প্রকল্পটি আগামী ২০১৩ সালের জুন মাসের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা রয়েছে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২৪৫ কোটি টাকার এই প্রকল্প সরজমিনে দেখতে বাংলাদেশ ও ভারতের ১০ সদস্যের একটি যৌথ প্রতিনিধি দল গত ৩০ সেপ্টেম্বর আশুগঞ্জ নৌবন্দর পরিদর্শন করেন।
এদিকে ভারতীয় ৩ হাজার ২২৫ টন পন্য নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ আর্ন্তজাতিক নৌবন্দরে নোঙর করা ৩টি জাহাজ থেকে কাষ্টমসের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে পন্য ট্রান্সশিপমেন্ট কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। আশুগঞ্জ নৌবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ ইমাম হোসেন জানান, জাহাজ ৩টির কাগজপত্র যাচাই করে সঠিক পাওয়ার পর ট্রান্সশিপমেন্ট করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এসব পন্য ট্রান্সশিপমেন্ট করে সিলেটের জকিগঞ্জ হয়ে করিমগঞ্জ নৌবন্দর দিয়ে ভারতের আসাম রাজ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে নবায়নকৃত নৌপ্রটোকল চুক্তির আওতায় বাংলাদেশের জল সীমানা ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোন রকম শুল্ক বা ফি নেয়া হচ্ছে না।
(আরিফুল ইসলাম সুমন, স্টাফ রিপোর্টার-ব্রাহ্মণবাড়িয়া