মতলব/ সেপ্টেম্বর-৭(কুমিল্লাওয়েব ডটকম)——-
লোড থাকা সত্ত্বেও চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ বিহীন থাকছে ১৩ হাজার গ্রাহক। পুরো উপজেলার বিদ্যুতায়িত অঞ্চলে একসাথে বিদ্যুৎ দিতে লোডের প্রয়োজন হয় ৭.২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। কিন্তু পর্যাপ্ত লোড থাকা সত্ত্বেও উপজেলার পাঁচানীতে নির্মিত বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটির ক্যাপাসিটি কমসহ পাওয়ার ফ্যাক্টরগুলো পুরাতন ও মেরামতকৃত হওয়ায় এ উপজেরার গ্রাহকরা প্রয়োজনীয় সেবা থেকে হচ্ছে বঞ্চিত।
১৯৯৭ সালে মতলব উত্তর উপজেলার পাঁচানীতে ৫ এমভিএ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। তখন এ উপজেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল মাত্র দেড় মেগাওয়াট। গত ১৫ বছরের ব্যাবধানে বর্তমানে এ উপজেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ৭.২ মেগাওয়াট। মতলব উত্তর উপজেলার বর্তমান গ্রাহক সংখ্যা ২৩ হাজার ৮৫৩ জন। এর মধ্যে আবাসিক গ্রাহক ২০ হাজার ৯০৭ জন, বানিজ্যিক গ্রাহক ২ হাজার ২৮৭ জন, শিল্প গ্রাহক ২১৭ জন, দাতব্য গ্রাহক ৩৯১ , সড়ক বাতি ৩৫ টি আর সেচের গ্রাহক রয়েছেন ১৬ জন। এখানে বিদ্যুতায়িত লাইন ৪৪৪.০৩ কিলোমিটার, বিদ্যুতায়িত গ্রাম ১৫৫টি আর অভিযোগ কেন্দ্র রয়েছে ০২ টি। এই উপজেলার মধ্যে ১২৯টি গ্রাম রয়েছে যেখানে বিদ্যুতের কোন ধরনের অবকাঠামোই তৈরী হয়নি।
বর্তমানে অনেক সময় দেখাযায়, মতলব উত্তর উপজেলার জন্য ৭ মেগাওয়াটেরও অধিক বিদ্যুত বরাদ্ধ দেয়া হচ্ছে আর এ উপজেলার বিদ্যুতের সর্বেচ্চ বরাদ্ধটাও ৭.২ মেগাওয়াটের মধ্যেই। কিন্তু উপজেলার পাঁচানী উপকেন্দ্রটি বিদ্যুৎ সরবরাহ করার ক্ষমতা রাখে মাত্র ৪ মেগাওয়াট। আর এই উপকেন্দ্রে ফিডার সংখ্যা ৪ টি। এর মধ্যে দুটি’র বেশী ফিডার একসাথে চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ২ টি ফিডার বন্ধ রেখে অপর ২টি ফিডার চালানো হলে একসাথে সাড়ে ১০ থেকে ১১ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সেবা দেয়া সম্ভব হলেও তখন লোড থাকা সত্ত্বেও বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত থাকছে ১৩ হাজার গ্রাহক। গত ০৩ আগষ্ট পর্যন্ত মতলব উত্তর উপজেলায় বর্তমান গ্রাহক সংখ্যা ২৩ হাজার ৮৫৩ হলেও দিনে দিনে এ সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেননা, এমতাবস্থাতেও বিদ্যুৎ সংযোগের নতুন আবেদন ও সংযোগ দেয়া রয়েছে অব্যাহত। কাজেই, পুরাতন ও মেরামতকৃত পাঁচানীর ৫ এমভিএ বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটি অচীরেই ১০ এমভিএ’তে উন্নীত করা অথবা নতুন আরেকটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র স্থাপন খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে।
তাছাড়া, মতলব উত্তর উপজেলাটির চারদিকে সেচ প্রকল্প বাঁধ এবং বাঁধের সাথে সাথে চারদিকেই নদী থাকায় এখানে বর্তমানে শিল্প কারখানা গড়ার যথেষ্ট সম্ভাবনাময় অঞ্চল হিসাবে গুরুত্ববহন করছে। আর উপজেলাটি গজারিয়া, মুন্সিগঞ্জ ও দাউদকান্দি’র নিকটবর্তী হওয়ায় ক্ষুদ্র ও মাঝাড়ি শিল্প উদ্যোক্তারা এখানে শিল্প কারখানা গড়ার ব্যাপারে দিনে দিনে আনেক বেশী আগ্রহী হয়ে উঠছেন। চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মতলব উত্তর উপজেলা জোনাল অফিস সূত্রে জানা যায়, ইদানিং ক্ষুদ্র ও মাঝাড়ি শিল্প উদ্যোক্তারা এখানে শিল্প কারখানা গড়ার ব্যাপারে যোগাযোগ করছেন। কিন্তু এই উপজেলার বিদ্যুৎ খাতের ক্যাপাসিটির এতো সীমাবদ্ধতার কথা শুনে তারা নিরুৎসাহীত হয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে ৬৪৮৪৬২৯৯ নং শিল্প মিটারের গ্রাহক এনামূল কবির সুমন বলেন, সময়মতো পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সুবিধা না পাওয়ার কারনে ব্যাবসা নিয়ে আমাদেরকে খুবই দুর্ভোগে পড়তে হয়।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মতলব উত্তর উপজেলা জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার এএইচএম মোবারক উল্যাহ বলেন, ৫ এমভিএ ক্ষমতা সম্পন্ন আরো একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র স্থাপনের করার বিষয়টি অনুমোদন হয়েছে তবে যা নির্মানে ব্যায় হবে দেড় কোটি টাকার মতো। কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষে বর্তমানে এতো টাকা ব্যায় করা খুবই কষ্টসাধ্য। কাজেই, কোন প্রকল্পের মাধ্যমে এই বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটি স্থাপিত হলে কাজটি সহজতর হতো এবং এখানকার গ্রাহকরাও অচীরেই এর সুফল পেতো।
(শামসুজ্জামান ডলার (চাঁদপুর)মতলবঃ)