আরিফুল ইসলাম সুমন ॥
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা মো. এমদাদুল হক ও তার ছেলে এনামুল হক সহ ১৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মাছ চুরির মামলা হয়েছে। গত শনিবার রাতে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গিয়াস উদ্দিন মামলাটি নথিভূক্ত করেন। মামলার বাদী ঢাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ও উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের টিঘর গ্রামের মৃত হরমুজ আলীর ছেলে মো. হাবিবুর রহমান।
এলাকাবাসী ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার টিঘর গ্রামে সে:মে: ১৭৪৮ দাগে প্রায় ১৮ একর একটি সরকারি পুকুর রয়েছে। মামলার বাদী হাবিবুর রহমানের পৈতৃক সম্পত্তির দু’টি পুকুর পাড় ভেঙ্গে সেই সরকারি পুকুরের সঙ্গে মিশে গেছে। জলমহাল ইজারা নিয়ম অনুযায়ী হাবিবুর রহমান সরকারি পুকুরটি লীজ না পেয়ে গত ২৮-১১-২০০৬ইং তারিখে আদালতে মামলা করেন। পাশাপাশি তার পৈতৃক মালিকানাধীন দুই পুকুরের অংশে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করে মৎস্য চাষ শুরু করেন। চাষাবাদ পুকুর পাহারা ও পরিচর্যার জন্য পাঁচজন লোক নিয়োগ দেয়া হয়। এদিকে বাদীর মামলার প্রেক্ষিতে টিঘর সরকারি পুকুরটির ওপর হাইকোর্টের একটি আদেশ জারি রয়েছে।
গত ৩০ জানুয়ারী রাতে আ’লীগ নেতা এমদাদুল হকের নেতৃত্বে অন্যান্য আসামিরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সেই পুকুরে বেড় জাল ফেলে প্রায় ৭০ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন জাতের মাছ ধরে নিয়ে যায়। এসময় পুকুরে দায়িত্বরত প্রহরীরা বাধা-নিষেধ নিলে তাদের বেধড়ক মারপিট করে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। বাদী হাবিবুর রহমান বলেন, পুরো পুকুরটি আমার দখলে রয়েছে। লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে মাছ চাষ করা হয়েছে। এমদাদুল হক উচ্চ আদালতের রায় অমান্য করেছে। তার নেতৃত্বে অন্যান্যরা রাতের আঁধারে পুকুরের মাছ চুরি করেছে।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করলে মুঠোফোনে আ’লীগ নেতা এমদাদুল হক বলেন, ওই সরকারী পুকুর আমরা ইজারা নিয়েছি। কিছুদিন আগে হাবিবুর রহমানের লোকেরা পুকুরের মাছ চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় নিয়মিত মামলা রুজু হয়। এখন উল্টো তারা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মাছ চুরির মামলা দিয়েছে। এই মামলাটি কোন তদন্ত ছাড়াই থানার ওসি কিভাবে নথিভূক্ত করল, কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। তিনি বলেন, আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্য নিবার্হী কমিটির সদস্য। জলমহাল ইজারায় নিজের স্বার্থ হাসিল করতে না পেরে অনেকে আমার বিরোধীতা করছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মাহফুজ আলী বলেন, দলের নাম ভাঙ্গিয়ে এমদাদুল হক নানা অনিয়ম করে যাচ্ছে। খাস পুকুর ইজারা নিয়ে টিঘর গ্রামের দু’দলের মাঝে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে রেখেছে। তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সুপারিশ করা হবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলাম ফারুক বলেন, মামলার তদন্ত চলছে।