আরিফুল ইসলাম সুমন ॥
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা মাঠে ছিল না। তারা কেউই কোন ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনে যাননি। বেলা ১১টার দিকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা এলিশা আফরিন খানম জানান, কালীকচ্ছ-শাহবাজপুর ক্লাস্টারের ৮টি বিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে কোন কোন বিদ্যালয়ে নির্বাচন চলছে এবং ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ কেমন-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই মূহুর্তে সব স্কুলের নাম মনে নেই। আমি এলাকার বাইরে বহু দূরে অবস্থান করছি। কালীকচ্ছ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. তকদীর হোসেন বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্বাচন বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। অরুয়াইল-চুন্টা ক্লাস্টারের ৪টি বিদ্যালয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অরুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান জানান, রাণীদিয়া (দঃ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। এ ধরণের নির্বাচন শিক্ষার্থীদের মাঝে বেশ কৌতুহলের সৃষ্টি করেছে। চেয়ারম্যান জানান, শিক্ষা অফিসের কোন কর্মকর্তাকে দেখা যায়নি। পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হক জানান, ইউনিয়নের কোন বিদ্যালয়ে এ ধরণের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে-এমনটি তার জানা নেই। এ বিষয়ে জানতে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জয়কুমার হাজরার মুঠোফোনে একাধিবার কল করলেও রিসিভ করেননি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছুঁটির দিনে তিনি বাড়িতে অবস্থান করছেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সদর ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন জানান, এই নির্বাচনে আপাতত সরকারি কোনো বরাদ্দ নেই। শিক্ষকেরাই নির্বাচন ব্যয় জোগান দিবেন। বরাদ্দ আসলে পরে তা মিটিয়ে দেওয়া হবে। তার ক্লাস্টারের ৮টি বিদ্যালয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, স্কুলগুলোর নাম এখন মনে পড়ছে না। স্টুডেন্ট কাউন্সিল নির্বাচনে শিক্ষা কর্মকর্তারা মাঠে না থাকার কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারি ছুঁটি চলছে। তাই হয়তো অনেকে আসেনি। উপজেলা সদরের কুট্টাপাড়া (পূর্ব) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ নরুল ইসলাম বলেন, অত্যন্ত জাক-জমকপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। শিক্ষার্থী ও ভোটার উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। আলীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আসমা বেগম বলেন, তার স্কুলে ভোটার সংখা ২২১। ভোট প্রদান করে ২০২ জন। ১০ প্রার্থীর মধ্যে নির্বাচিত হয় ৭ জন। ভোট কেন্দ্রে প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ব্যালট পেপার, বাক্স ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অর্থ জোগান দেন শিক্ষকরা। ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনে শিক্ষা অফিসের কেউ আসেননি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. এনামুল হক বলেন, আমি সহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করছি। কিন্তু সরাইলে শিক্ষা কর্মকর্তারা মাঠে নেই। বিষয়টি শুনে দুঃখ পেলাম। তারা ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনে যাওয়া উচিত ছিল।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাফায়াৎ মুহম্মদ শাহে দুল ইসলাম বলেন, স্টুডেন্ট কাউন্সিল নির্বাচন বিষয়ে শিক্ষা অফিস কিছুই জানায়নি।