সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা পরিষদ নারী ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা পারভীনকে তার নিজ দপ্তরে যৌন হয়রানির অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে নারী সমাজ। গতকাল সোমবার সকালে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে সম্মেলিত নারী সমাজ মানব বন্ধন কর্মসূচি ও প্রতিবাদ মিছিল করেছেন। এতে বিভিন্ন নারী সংগঠনের নেত্রী সহ তিন শতাধিক নারী অংশ নেন।
মানব বন্ধন কর্মসূচিতে ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা পারভীন ওই দিনের ঘটনা বর্ণনা করে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা জাকিরের বিচার দাবি করেছেন। এসময় তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধি। ‘আমারই যদি নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে রাস্তা-ঘাটে চলাচলকারী সাধারণ মা-বোনদের নিরাপত্তা থাকবে কিভাবে।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, অভিযুক্ত জাকির উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী রফিক উদ্দিন ঠাকুরের ভাতিজি জামাই। জাকির রাস্তা-ঘাটে আমাকে প্রায়ই উত্যক্ত করত। লোক লজ্জার ভয়ে আমি নীরব থাকি। গত ২২ জানুয়ারী দুপুরে একটি অনুষ্ঠান শেষে অফিসে কাজ করার সময়ে নানা অশ্লীল অঙ্গ-ভঙ্গি ও কথাবার্তায় সে আমাকে যৌন হয়রানি করে। আমি প্রতিবাদ করায় জাকির আমাকে লাঞ্ছিত করে। বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানালেও তিনি কোনো গুরুত্বই দেননি। থানায় অভিযোগ করলে নানা নাটকীয় ঘটনার পর মামলা রেকর্ড হয়। কিন্তু অভিযুক্ত জাকির এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করছে না। মামলা তুলে নিতে আমাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমার পরিবারের লোকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হবে বলেও তারা জানিয়েছে। জাকির একটি খুনের মামলার আসামি। বর্তমানে আমি সহ আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
কর্মসূচির বক্তব্যে নারী নেত্রী মোমেনা বেগম বলেন, একজন নারী জনপ্রতিনিধিকে যৌন হয়রানি করে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা জাকির এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করছে না। বিষয়টি নারী সমাজকে ভাবনায় ফেলে দিয়েছে। নারী সংগঠনের নেতা রিতা আক্তার, রৌশনারা, রেহেনা বেগম, গুলজাহার ও মর্জিনা বেগম তাদের বক্তব্যে অনতিবিলম্বে বখাটে জাকিরকে গ্রেপ্তার করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দাবি জানান। অন্যথায় তারা আরও কঠিন কর্মসূচির ঘোষণা দেন।