কুমিল্লা প্রতিনিধি :
কুমিল্লায় মহাসড়ক ও সড়ক জুড়ে অদক্ষ, ক্রটিপূর্ণ যানের পাশাপাশি চালকদের অনিয়ন্ত্রিত গাড়ি চালানোর জন্য বেড়েই চলছে সড়ক দুর্ঘটনা। এতে নিহত ও আহত হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। অনেকে হয়ে যাচ্ছে চীরতরে পুঙ্গু। দূর্ঘটার পর মামলা হলেও ক্ষতিপূরণ কিংবা সাহায্য সহযোগীতা পাচ্ছে না কোন আহত নিহতের পরিবার। অদক্ষ চালকদের বিরুদ্ধে যেমন- কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না, তেমনি ক্রটিপূর্ণ যানবাহনের মালিকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নিরব। আর এর ফলে দুর্ভোগ, ভোগান্তি, ক্ষতি গ্রস্থের শিকার সাধারন মানুষ। বিগত ২০১১ সালে কুমিল্লার মহাসড়ক ও সড়ক জুড়ে চালকদের অসতর্কতা কিংবা ক্রটিপূর্ণ যানবাহনের কারণে দূর্ঘটনা কবলিত হয়ে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ২ শতাধিক লোক। আহত হয়েছে প্রায় ১ হাজার। বিগত বছরে জেলায় সবচেয়ে বড় দূর্ঘটনাটি ঘটে ব্রাহ্মণপাড়ায়। এদিন ট্রেনের সাথে যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষে ১৩ জন বাসযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এছাড়াও এসময় ঘটে যাওয়া দূর্ঘটনার কিছু বিবরণঃ ২৬ ডিসেম্বর দাউদকান্দিতে বাস চাপায় রমুজা বেগম (৫০) নিহত হয়। ১২ ডিসেম্বর চান্দিনার কুটুম্বপুরে বাস চাপায় জহিরুল (৩০) নামে একজনের মৃত্যু হয়। ৩ ডিসেম্বের চান্দিনায় হোসেনপুরে হোন্ডা আরোহী এক অজ্ঞাত (৩৮) মহিলা ট্রাকের ধাক্কায় নিহত হয়। ১৯ নভেম্বর সদর দক্ষিনের চাদঁপুরে কভার্ড ভ্যানের চাপায় আব্দুল লতিফ (৬০) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। ৯ নভেম্বর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সদর দক্ষিণের সুয়াাগাজী এলাকায় বাস-পিকআপের সংঘর্ষে দু’জনের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন সাইফুল ইসলাম (২৬) এবং ইউসুফ (২৩)। ১৮ অক্টোবর ঢাক-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামের সুজাতপুর এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় দাদা-নাতী নিহত হয়। তারা হলেন, ফজলের রহমান (৭০) ও নাতী রাজীব (১০)। ১২ অক্টোবর দেবিদ্ধারে অটোরিক্সা দূর্ঘটনায় সুলতান মিয়া নামে একজন মারা যায়। ২ অক্টোবর চৌদ্দগ্রামে পৃথক দুটি সড়ক দূর্ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন, সাঈদ আলী, রফিকুল ইসলাম ও অজ্ঞাত একজন। ১৯ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা সদর উপজেলার বারপাড় এলাকায় ট্রাক্টর চাপায় অপূর্ব (২) ও সজল (৮) নামে দু’শিশু এবং চৌদ্দগ্রামের নানকড়া এলাকায় বাস ও কভার্ড ভ্যানের মুখোমুখী সংঘর্ষে ইউসুফ (৪৫) নামে কভার্ডভ্যান চালক নিহত হয়। ৬ সেপ্টেম্বর সদর দক্ষিণের লালমাই বাইপাস এলাকায় বাস ও মাইক্রোর মুখোমুখী সংঘর্ষে হারুনুর রশিদ (৫২) ও মাইক্রোর হেলপার বাদশা মিয়া (২৪) এবং চান্দিনা ও দাউদকান্দিতে পৃথক দুটি দূর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়। ৩১ আগষ্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামের ঘাংড়া এলাকায় একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় পার্শ্বে খাদে পড়ে গেলে ঘটনাস্থলে ২ জনের মৃত্যু হয়। ১৮ আগষ্ট চৌদ্দগ্রামের আমানগন্ডায় দুটি কভার্ড ভ্যানের সংঘর্ষে লোকমান (৪৫) নামে ১ জনের মৃত্যু হয়। ৬ আগষ্ট সদর দক্ষিণের মাটিয়ারা এলাকায় ঢাকাগামী ভলবো পরিবহনের বাস চাপায় দু’পথচারী নিহত হয় । তারা হলেন, মোহাম্মদ (৬০) ও আমিন মিয়া (৫০)। ৩১ জুলাই দাউদকান্দির দৌলতপুরে ট্রাক উল্টে ঘটনাস্থলে তাজুল ইসলাম (৫০) ও মহসিন (৩২) নিহত হয়। ৬ জুলাই চৌদ্দগ্রামের চিওড়া এলাকায় অজ্ঞাত কভার্ডভ্যান চাপায় ১ জন একই দিন বিকেলে আমজাদের বাজার নামক স্থানে দুটি মোটর সাইকেলের মুখোমুখী সংঘর্ষে আরো ১ জন নিহত হয়। ২১ জুন দাউদকান্দির আমিরাবাদ এলাকায় ট্রাক চাপায় সামিনা (৩২) নামের এক মহিলা প্রাণ হারায়। ২ জুন কুমিল্লা সিলেট মহাসড়কের ময়নামতি তুতবাগান এলাকায় যাত্রীবাহী বাস একটি অটোরিক্সাকে চাপা দিলে চালক রফিক সহ ৩ জনের মৃত্যু হয়। ১২ মে সদর দক্ষিণের জাঙ্গালীয়া এলাকায় সিএনজি অটোরিক্সা ও ট্রাকের মুখোমুখী সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হয়। নিহতরা হলেন, সি এন জি চালক আলমগীর (২৮), যাত্রী হাসনা (৬০), মোস্তফা (৩৮), সুমন (৭) ও মিলি আক্তার (৯) । ৩০ এপ্রিল দেবিদ্বারের জারফগঞ্জ এলাকায় দুটি সিএনজির মুখোমুখী সংঘর্ষে হান্নান নামে একজনের মৃত্যু হয়। ২২ এপ্রিল চৌদ্দগ্রামের গাংরা এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস উল্টে গেলে হেল্পার রনি (২০) নিহত হয়। ১৪ এপ্রিল সদর উপজেলার আমড়াতলী এলাকায় ট্রাক চাপায় ১ জন নিহত হয়। ৮ ফেব্র“য়ারী সদর দক্ষিণের বেলতলী এলাকায় বাস ও টেম্পুর সংঘর্ষে আলভী আলম সরকার ও মাসুম বিল্লাহ নামে দু ছাত্র নিহত হয়। ১২ মার্চ কুমিল্লা চাদপুর সড়কের সদর দক্ষিণের রামপুর এলাকায় যাত্রীবাহী বাস অটোরিক্সাকে ধাক্কা দিলে অজ্ঞাত (২৫) যুবকের মৃত্যু হয়। ৪ মার্চ লাকসামের চন্দনা বাজারে যাত্রীবাহী সিএনজি অটোরিক্সা ও পিকআপের সংঘর্ষে ১ জনের মৃত্যু হয়। ২৭ জানুয়ারী ঢাক-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাত ঘড়িয়ায় অজ্ঞাত কভার্ডভ্যানের একটি ট্রাককে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে আলম (১৬) নামের এক কিশোরের মুত্যু হয়। ৩ মার্চ চৌদ্দগ্রমের বাতিসা রাস্তার মাথায় অজ্ঞাত বাস চাপায় আব্দুল মালেক (৪০) নিহত হয়। ১৯ ফেব্র“য়ারী ব্রাহ্মণপাড়ার শশীদল আউটার সিগনাল এলাকায় রেলপথের উপর যাত্রীবাহী বাস ও ট্রেনের সংঘর্ষে ১৩ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন, মোহাম্মদ আলী (৫০) সিরাজুল ইসলাম (৬৫), মাজেদা (৬০) জমির (১০) ফয়সল (১৭) আনুমিয়া (৫০) কাউসার (৩০) আবদুল হাশেম (৫৫) ফরিদ (৩৫) লুৎফুন্নেছা (৪৮) । ১ ফেব্র“য়ারী দেবিদ্বারের ছোট শালঘর এলাকায় অটোরিক্সা ও পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখী সংঘর্ষে চানমিয়া (৩৫) নামে ১ জনের মৃত্যু হয়। ১৩ জানুয়ারী দাউদকান্দির হরিপুর এলাকায় সংঘর্ষে সফিকুল ইসলাম (৩৭) নিহত হয়।
