স্বভাব নয়, অভাবের তাড়নায় পতিতাবৃত্তি করছি

আরিফুল ইসলাম সুমন ॥
স্বভাবগত কোন কারণে নয়, অভাবের তাড়নায় পতিতাবৃত্তি করছি। তিন বছর আগে বাবা মারা গেছে। ঘরে বিধবা অসুস্থ মা। ভাই নেই। একমাত্র ছোট বোন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। সহায় সম্পত্তি বলতে কিছুই নেই। দারিদ্রতার কারণে লেখাপড়া করতে পারিনি। মায়ের ওষুধ, বোনের পড়ার খরচ ও খাবার জোগাড়ের তাগিদে এ অন্ধকার জীবনে নামতে বাধ্য হয়েছি। আপনারা দয়া করে আমাকে জেলে পাঠাবেন না, ছেড়ে দিন। নইলে অসহায় মা-বোন না খেয়ে থাকবে। গত বুধবার রাতে পুলিশ ও সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে কান্নাজড়িত কন্ঠে দু’হাত জোড় করে কথাগুলো বলছিল পুলিশ হেফাজতে থাকা বৃষ্টি নামের এক কিশোরী।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় সরাইল-নাসিরনগর সড়কের উপজেলার কালীকচ্ছ ধরন্তী হাওর এলাকা থেকে টহল পুলিশ বৃষ্টি নামে ওই কিশোরী ও দুই যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আটক দুই যুবক হল-উপজেলা পানিশ্বর ইউনিয়নের বেড়তলা গ্রামের সাবেক মেম্বার আজগর আলীর পুত্র হিমন (২০) ও একই গ্রামের ইলিয়াছ মিয়ার পুত্র মিজান (২১)। থানায় পুলিশ ও সাংবাদিকদের কাছে বৃষ্টি নামে ওই কিশোরী পতিতাবৃত্তির কথা স্বীকার করে। মেয়েটি জানায়, গ্রামের বাড়ি ছেড়ে অসুস্থ মা ও ছোট বোনকে নিয়ে একমাস আগে জেলা শহরের ফুলবাড়িয়ায় বাসা ভাড়া নেয়। অভাব-অনটনের সংসারের হাল ধরতে সে এ অভিশপ্ত পেশায় নেমেছে। বৃষ্টি আরও জানায়, জনৈক এক মহিলার মাধ্যমে সে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন স্থানে যায়। হিমন ও মিজান দুই হাজার টাকায় চুক্তি করে তাকে এখানে এনেছে। এই টাকা থেকে ওই মহিলাকে কমিশন দিতে হবে। মেয়েটি আক্ষেপ করে বলে, জানি এ ঘৃন্য কাজ ইসলাম ও আইন পরিপন্থি। তবুও আমাকে এ কাজ করতে হবে। কারণ আমি পরিস্থিতির স্বীকার।

এ ব্যাপারে সরাইল থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা (এসআই) কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কেউ অভিযোগ না করায় আটক ছেলে-মেয়ে তিনজনকে তাদের পরিবারের লোকদের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

Check Also

আশুগঞ্জে সাজাপ্রাপ্ত আসামির মরদেহ উদ্ধার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি :– ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মো. হারুন মিয়া (৪৫) নামে দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত এক আসামির ...

Leave a Reply