মতলব উত্তরে অতিদরিদ্রদের কর্মসৃজন প্রকল্পের হাল হকিকত

মতলব উত্তর (চাঁদপুর) সংবাদদাতা :
কর্ম না থাকা সময়কালীন সরকার অতিদরিদ্রদের জন্য ৪০দিনের যে কর্মসৃজনের ব্যাবস্থা করেছেন সেই কর্মসৃজনে মতলব উত্তর উপজেলায় প্রতিদিন ৫৬৬ শ্রমিক দৈনিক ৭ ঘন্ট করে ১৭৫টাকা হারে কাজ করার কথা এবং এ কাজে অর্থ বরাদ্ধ ছিল ৩৯ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা। আর অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের এই ৪০দিনের কাজের মেয়াদ ৩০নভেম্বরের’’১১ইং এর মধ্যে শেষ হবার কথা থাকলেও পরে এ কাজের সময়সীমা ৩১ডিসেম্বও ’১১ইং পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছিল। উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের মধ্যে ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়নে ৪৫ জন শ্রমিক ৩ লক্ষ ১৫ হাজার টাকার কাজ করার কথা। সে মোতাবেক এই ৪০দিনের কাজের কি হাল হাকিকত তা দেখার জন্য গত ১৬ জানুয়ারী’১২ইং সকালে মোটরসাইকেরে করে উপজেলার ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়নের কাজ সরেজমিনে দেখি-

ইউনিয়নের সাইজুদ্দিন সরকারের বাড়ী হতে গোলাম সরকারের বাড়ী হয়ে নবুরকান্দি সিরাজ মাষ্টারের মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা নির্মান প্রকল্পে অর্থ বরাদ্ধ ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা আর শ্রমিক সংখ্যা দৈনিক ১৫ জন। এ কাজ সরেজমিনে দেখতেগিয়ে এতোটাই হতবাক হয়েছি যে যা লিখে প্রকাশ করা সত্যিই কঠিন। কারন, এ প্রকল্পের উল্টো দিক থেকে অর্থাৎ সিরাজ মাষ্টারের মসজিদ থেকে গোলাম সরকারের বাড়ী হয়ে সাইজউদ্দিন সরকারের বাড়ী পর্যন্ত আসলাম। এর মধ্যে সাইজউদ্দিন সরকারের বাড়ীর কিছুটা সামনে এগিয়ে গেলে যতসামান্য কাজ চোখে পড়লেও প্রকল্প রাস্তার সুরুজ মিয়া সরকার বা শাহাদাৎ সরকারের বাড়ী থেকে নবুরকান্দি সিরাজ মাষ্টারের মসজিদ পর্যন্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ হেটে যাবারও কোন প্রমান রাখেনি। উল্লেখিত অঞ্চলের কোথাও কাজের নূন্যতম কোন চিহ্ন নেই। এই পথ সরু ও চিকন একটি পায়ে হাটার পথ মাত্র এবং ঐ হাটার পথের প্রসস্ততা হবে ১ থেকে দেড় হাতের মতো। রাস্তার উপরে ছোট ছোট গাছগাছালি এমনটাই বড় বড় যে এ রাস্তায় মাটির কাজ হয়েছে তা বলার কোন সুযোগই নেই। এ প্রকল্পের রাস্তায় যতসামান্য যতটুকু কাজ হয়েছে প্রকল্পের উল্লেখিত মোট রাস্তার সাথে তুলনা করলে ঐ রাস্তার ১০ ভাগের ১ ভাগ অংশে কাজ হয়েছে মাত্র।

এরপর, দিঘলীপাড় রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে দিঘরীপাড় মাদ্রাসার পাশদিয়ে হিন্দুপাড়া সেচ ক্যানেল পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজের অর্থ বরাদ্ধ ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা আর একাজেও দৈনিক শ্রমিকের সংখ্যা ১৫ জন করে দেখানো আছে। কিন্তু প্রকল্প ঘুরে দেখাগেলো, প্রকল্প রাস্তা সংলগ্ন ছিদ্দিকুর রহমানের বাড়ীর সামনে থেকে সেচ ক্যানেল পর্যন্ত রাস্তায় কোন মাটি ফালানো হয়নি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মাধ্যমে জানা যায়, সপ্তাহের ৫ কর্মদিবসে শ্রমিকদের দৈনিক ১৭৫টাকা হারের টাকাটা সাপ্তাহিক বিল হিসাবে শ্রমিকদের প্রদান করার কথা এবং একাজে মহিলা শ্রমিক থাকবে শতকরা ৩০ জন । অথচ, ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়নের শ্রমিকদের লেন-দেনের কৃষি ব্যাংক নাউরীবাজার শাখায় গিয়ে দেখা যায়, এখানে জনপ্রতি ১ চেকের মাধ্যমে এককালিন ৭ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। যা প্রতি শ্রমিকের এককালীন পুরো ৪০দিনেরই মজুরীর টাকা। শ্রমিকদের শতকরা ৩০ জনের হারে মহিলা শ্রমিক থাকার কথা থাকলেও এখানে সে পরিমান মহিলা শ্রমিক ছিলনা এবং ব্যাংকেই রয়েছে তার প্রমান।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ এর সাথে (সাংবাদিকদের একজন) মুঠোফোনে কথা বলাকালে অফিসে কোন টাকা-পয়সা দেয়া লাগছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিস চাইছে ১০ পারসেন (শতকরা ১০ভাগ)।

Check Also

যে কোনো আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে : বিএনপি

চাঁদপুর প্রতিনিধি :– চাঁদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাধারণ সভায় বক্তারা বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম ...

Leave a Reply