কুমিল্লাওয়েব ডেস্ক :
নবগঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি থেকে অব্যহতি নিয়ে নাগরিক কমিটির ব্যানারে নির্বাচন করা মনিরুল হক সাক্কু। তিনি নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত আফজল খানকে ৩০ হাজার ৩১১ ভোটের ব্যাবধানে পরাজিত করেন।
৬৫টি কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফলে হাঁস মার্কা প্রতীক নিয়ে সাক্কু পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৭৪০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত আফজল খান আনারস মার্কা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৪২৯ ভোট। কুমিল্লা টাউন হলে স্থাপিত নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন।
ইভিএম নিয়ে শুরু থেকে আপত্তি ছিল মনিরুল হকের। আজ সকালে ভোট গ্রহণের শুরুর দিকে তিনি সাংবাদিকদের কাছে ইভিএম ভোট গ্রহণ করা নিয়ে ভীতির কথাও বলেছিলেন। রাতে ফলাফল ঘোষণার পর মনিরুল হক বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমার মধ্যে অনেক সংশয় ছিল। ইভিএম নিয়ে ভীতিও ছিল। সবকিছু ম্লান করে দিয়ে আমি জয়ী হয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘আমি জনগণের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছি, দল ছেড়েছি। জনতা আমাকে প্রতিদান দিয়েছে। ভোট দিয়ে ঋণী করে ফেলেছে। আমিও তাদের প্রতিদান দেব।’
সম্মিলিত নাগরিক কমিটির ব্যানারে মনিরুল হক ভোটে দাঁড়ালেও স্থানীয়ভাবে তিনি বিএনপির প্রার্থী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। বিজয়ী হওয়ার পর বিএনপিতে ফিরে যাবেন কি না, এ প্রশ্নের জবাবে মনিরুল হক বলেন, ‘৩৩ বছর যে দল করেছি, তার প্রতি আমার গভীর অনুরাগ রয়েছে। শিগগিরই ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) সঙ্গে দেখা করব। তাঁকে বোঝাব কেন আমি দল থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলাম। আমার ভোটারদের সঙ্গেও কথা বলব।’
ভোটের ফলাফলের পর আফজল খানের প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগ করলে তাঁর বড় ছেলে ও প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মাসুদ পারভেজ খান বলেন, ‘নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু হয়েছে। ইভিএমে দুই নম্বরী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। জনগণের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই। মনিরুল হককে আমি নিজে অভিনন্দন জানিয়ে এসেছি।’
এরআগে মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে কুসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোট বিরতি ছাড়া বিকেল ৪টায় শেষ হয়। নির্বাচনে কোথাও তেমন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে একটি কেন্দ্রের বাইরে একটি ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত এবং অপর একজন জাল ভোট দিতে এসে ধরা পরার পর ছয় মাসের জেল হয়েছে।
এই প্রথম কোনো নির্বাচনে ভোটাররা শতভাগ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ভোট দেন। বয়স্করা এই পদ্ধতিতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়লেও তরুণরা ভোট দেয়ার এই পদ্ধতি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
কুসিক নির্বাচনে ৯ জন মেয়র, ৬৯ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ২১৭ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে ৬৫টি কেন্দ্রে এক লাখ ৭০ হাজার ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার কথা থাকলেও নির্বাচন কমিশনের আশা, ৭০ শতাংশের বেশি ভোট কাস্ট হয়েছে।
২৭টি ওয়ার্ডে ৬৫টি ভোট কেন্দ্রে সম্পূর্ণ ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হয়। ৬৫টি কেন্দ্রে ৬৫ জন প্রিসাইডিং অফিসার ভোট গ্রহণে দায়িত্ব পালন করছেন।