সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী,কুমিল্লা :
ইভিএম বাতিল ও সেনা মোতায়েনের দাবী তুলে প্রথম বারের মত অনুষ্ঠিতব্য কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীতা দেয়নি। সিটি কর্পোরেশন ঘোষণার পর থেকেই বিএনপি’র দলীয় প্রার্থী হতে প্রচারণা শুরু করেন কুমিল্লা (দ:) জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাাদক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক সাক্কু। নির্বাচন কমিশন বিএনপি’র দাবী আগ্রাহ্য করলে গত ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় নির্বাচন বর্জনের। এ অবস্থায় কেন্দ্রের নির্দেশে ইয়াছিন নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাড়ালেও মনিরুল হক সাক্কু মাঠে থেকে যান। এক সময় দলীয় পরিচয় গোপন করতে নিজ উদ্যোগে সম্মিলিত নাগরিক ফোরাম গঠন করেন। তারা সাক্কুকে প্রকাশ্যে তাদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়। এই প্রক্রিয়া যখন চলতে থাকে তখন ইয়াছিনের নেতৃত্বে বিএনপি’র অংশটি প্রকাশ্যে বিরোধীতায় নামে সাক্কুর। প্রতিটি সাধারণ কর্মীর কাছে ‘ম্যাসেজ’ দিতে থাকে ভোট বর্জনের। এ অবস্থায় গত ১২ ডিসেম্বর বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব (দপ্তরের দায়িত্ব প্রাপ্ত) অ্যাড রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত চিঠিতে সাক্কুকে বিএনপি’র সকল পদ থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। জেলা বিএনপিতে ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই মূলত: ইয়াছিন- সাক্কু’র প্রকাশ্যে বিরোধ শুরু হয়। মেয়র নির্বাচনে সাক্কু প্রার্থী হিসেবে থেকে গেলে ইয়াছিন তার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লাগে। দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বিএনপি থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হলে ইয়াছিন সহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন সাক্কুর বিরুদ্ধাচরণ করতে থাকে। সাক্কু সাহায্যের হাত বাড়ায় অধূনা বিলুপ্ত কুমিল্লা-৯ আসনের সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরীর কাছে। রাজনৈতিক কারণে মনিরুল হক চৌধুরীর সাথে হাজী ইয়াছিনের পূর্বের বিরোধ ছিল। সুযোগটি লুফে নেয় মনিরুল হক চৌধুরী। এছাড়া বিএনপি থেকে সাক্কুকে বহিস্কার করায় ব্এিনপি’র সাধারণ নেতা কর্মীরা রাজনৈতিক কারণে আওয়ামীলীগ বা অন্য প্রার্থীর দিকে না ঝুকে অব্যাহতি প্রাপ্ত বিএনপি’র নেতার দিকে ঝুকে পড়ে। সূত্র আরো জানায়, আমির উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থিত নেতা কর্মীরা ব্যাপকভাবে সাক্কু বিরোধী প্রচারণা চালালেও সাধারণ ভোটাররা তাদের মূল্যবান ভোট প্রতি পক্ষ রাজনৈতিক দলের প্রার্থীকে দিতে নারাজ। এছাড়াও আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী প্রার্থী অধ্যক্ষ আজফল খান ক্ষমতাসীন দলের নেতা থাকলেও নিজ উদ্যোগে স্কুল কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা ব্যতীত সরাসরি জনগণের উন্নয়নের কোন কাজে তার কোন অবদান নেই । স্বাধীনতার পর তৎকালীন সদর পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান থাকায় বিষয়টি এখন আর নগরবাসীর মনে নেই। কেননা সে সময় যে লোকসংখ্যা ছিল বর্তমানে তা কয়েকগুন বেড়েছে। আর ২০০৫ সালে উপনির্বাচনে সদর পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সাক্কু প্রকাশ্যে কিংবা গভীর রাতে নগরীর বিভিন্ন সড়কের পাশে কিছু কিছু ড্রেনেজ ব্যবস্থা পরিস্কার সহ নগরীর কিছু রাস্তার পাশে ঝোপঝাড় পরিস্কার করে সৌন্দর্য্য বর্ধনে বাগান নির্মাণ করেন। যা এই নগরীর সাধারন মানুষ গুরুত্ব সহকারে লূফে নেন। সে জন্য বহু আ’লীগ সমর্থিত ভোটারদের সাক্কুর পক্ষে ভোট দোয়ার কথা শোনা যায়। এদিকে আওয়ামী বিরোধী শিবিরের ভোটররা সাক্কু’র দিকে ঝুকে যাওয়ার বিএনপি’র ইয়াছিন গ্র“পের নেতাদের ভোট দানে বিরত কিংবা বিরোধীতা কোন কাজেই আসছে না। এবস্থায় অব্যহতি প্রাপ্ত বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু’র দিকে বিএনপি’র ভোটারদের আগ্রহ দিন দিন বেড়ে যাওয়ার জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদকের পক্ষের অংশটি শংকিত হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে তাদের পক্ষের কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্বিতা করা ১১ জনের মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেছে। বিভিন্নভাবে দলীয় সাধারণ ভোটারদের সাক্কু’র বিরুদ্ধচরন সহ নানাভাবে প্রচারণা চালালে ও দিন দিন সাক্কু’র জনপ্রিয়তা বাড়ছে। নগরীতে এমন কথা চালু হয়েছে নির্বাচনে সাক্কুর পরাজয় তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানবে, একইভাবে তার জয় সাধারণ সম্পাদক সহ জেলা বিএনপি’ যুবদল ও ছাত্রদলের বিরাট একটা অংশের নেতৃত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
Check Also
দাউদকান্দিতে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু
হোসাইন মোহাম্মদ দিদার :কুমিল্লার দাউদকান্দিতে শান্তা বেগম (২৪) নামে এক গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ...