কুমিল্লা প্রতিনিধি :
সম্ভাব্য মারাত্মক দূর্ঘটনা থেকে ট্রেন রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে আলোচিত দুই সাহসী তরুন রাকিব ও সুমনকে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা ও পুরস্কার দেয়া হয়েছে। সংবর্ধনায় প্রত্যেককে দশ হাজার টাকার মূল্যমানের প্রাইজবন্ড, বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক ধন্যবাদপত্র সনদ এবং ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
সেই সাথে বাংলাদেশ রেলওয়েতে আগামীতে কোন চাকুরীর জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে তারা তাদের যোগ্যতা অনুসারে আবেদন করলে, তাদের বিষয়টি বিশেষভাবে দেখা হবে বলে অঙ্গীকার করা হয়।
বুধবার সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলীর কুমিল্লা কার্যালয়ে এই সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (চট্টগ্রাম) সুকুমার ভৌমিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন মোহনপুর ৪নং বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের মাননীয় চেয়ারম্যান মো: হুমায়ুন কবির। অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে ছিলেন বিভাগীয় প্রকৌশলী মো: আবুল কালাম চৌধুরী, বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোক) শাহ সুকীনুর মোহাম্মদ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কমাডেন্ট শাহ্-আলম, বিভাগীয় সিগন্যাল এন্ড টেলিকম প্রকৌশলী সুশীল কুমার হালদার, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মো: জাকির হোসেন, সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (কুমিল্লা) হামিদুর রহমান এবং ষ্টেশন মাষ্টার (কুমিল্লা) মো: হোসেন মজুমদার প্রমুখ।
এছাড়াও এ সময় বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক, রেলওয়ের অন্যান্য উর্ধ্বতন ও স্হানীয় কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঘটনাস্হলের এলাকাবাসী, প্রত্যক্ষদর্শী এবং আলোচিত দুই কিশোর রাকিব ও ও সুমন এর বাবা উপস্হিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের প্রথমে রাকিব ঘটনার বর্ণনা দেন। তাদের কৃতিত্ব পূর্ণ সাহসী ও বুদ্ধিদীপ্ত কাজের প্রশংসা ও বিভিন্ন দিক আলোকপাত করে সমাপনি বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি সুকুমার ভৌমিক।
সুকুমার ভৌমিক বলেন, এ কিশোরদ্বয় প্রতিবন্ধী হয়েও যে কাজটি করেছে তা অবশ্যই বুদ্ধিদীপ্ততার পরিচয় দিয়েছে এবং সম্ভাব্য দূর্ঘটনা থেকে একটি ট্রেনকে রক্ষা করছে। তাই তাদের এই অন্যন্য বুদ্ধিদীপ্ততা, সাহসীকতা ও দেশপ্রেমের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক তাদের দশ হাজার টাকার মূল্য মানের প্রাইজবন্ড এবং ধন্যবাদপত্র সনদ দেয়া হচ্ছে। সেই সাথে বাংলাদেশ রেলওয়ের আগামী চাকুরী নিয়োগে তারা তাদের যোগ্যতা অনুসারে আবেদন করলে তাদের বিষয়টি অবশ্যই বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা হবে।
তিনি তাদের দীর্ঘায়ু ও সফলতা কামনা করে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ৪নং বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের স্হানীয় চেয়ারম্যান মো: হুমায়ুন কবির বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক তাদের এই সাহসীপূর্ণ কাজের জন্য যে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে তাতে আমরা আনন্দিত। আমরাও স্হানীয়ভাবে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের এই অনন্য কাজের জন্য সংবর্ধনা দেবো। বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসীর পক্ষে আমার দাবী তারা উভয়েই প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাদের এই অন্যন্য কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশ রেলওয়ে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কোন চাকুরী দিলে তাদের উপকারে আসতো।
উল্লেখ্য গত ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা সদর দক্ষিণের মোহনপুর স্হানীয় ভাবে শিকারপুর হিসেবে পরিচিত স্হানে রাকিব ও সুমন নামের এই দুই প্রতিবন্ধী কিশোর রেল পথে ভাঙ্গা দেখতে পান এবং তারা গাড় গোলাপি রঙের জাম্পার ও একটি বেগুনী গেঞ্জি উড়িয়ে ঐ সময়ে আসা একটি ট্রেন থামায়। এতে লাকসাম থেকে ভৈরব বাজারগামী ১৬১ আপ ট্রেনটি দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়। ঐ সময় ট্রেনে অন্তত ৩শ যাত্রী ছিল।