শামসুজ্জামান ডলার, মতলব উত্তর (চাঁদপুর) :
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার রোপা আমন ধান যেনো এখন কৃষকের গো-খাদ্য। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার রোপা আমন ক্ষেতে পোঁকার আক্রমন, সময়মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে না পারা, প্রতিকুল আবহাওয়া ও জমিতে পানির অভাবে ধান গাছগুলো শুকিয়ে ধান গাছে ছড়া বেড় হবার সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে। এর ফলে উপজেলা কৃষকরা এখন খুবই হতাশ। রোপা আমন ধানক্ষেতে ফলনের সকল সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাওয়ায় কৃষকরা এখন তাদের ভরা ধান ক্ষেতে গরু বেঁধে তা গো-খাদ্য হিসাবে কাজে লাগাচ্ছে। আর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ রোপা আমন ধান ক্ষেতেরই এ হাল লক্ষ্য করা যায়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে মতলব উত্তর উপজেলায় ৮হাজার ১শ’৮৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করা হয়েছে। এ উপজেলায় রোপা অমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়ালেও এ বছর এখানে আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা যে অর্জিত হবে না তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে যাওয়া অমন ধান ক্ষেতে কৃষক তার গরু বেঁধে গো-খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করলেও আগামী দিনগুলো নিয়ে তারা খুবই চিন্তিত। কেননা, অনেক কৃষকই সুদে টাকা নিয়ে আমনের আবাদ করেছে বলে বেশ ক’জন দরিদ্র কৃষকের সাথে আলাপকালে এমনটাই জানা গেছে।
উপজেলার ঠাকুরচর, সুজাতপুর, গজরা, রাঢ়ীকান্দি, মান্দারতলীসহ কয়েকটি অঞ্চল ঘুরে রোপা আমন ক্ষেতে গরু বাঁধা অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায় এবং গরু কৃষকের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যতেœ লালন করা ধান গাছ গুলো খাচ্ছে। অপ্রত্যাশিত এমন দৃশ্যের মুখোমুখি হয়ে আমন ক্ষেতে গরু বেঁেধেছেন এমন কয়েকজন ভুক্তভোগী কৃষকের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা হলে তারা খুবই হতাশা প্রকাশ করেন। আর তারা বলেন, আগামী বোর মৌসুমেওতো এই ক্ষতি আর পোষাইতে পাড়তাম না। হুনছি স্যালো মেশিন চালানের ডিজেলের দাম আবার বাড়ছে তয় অমরা ক্ষেতে পানি দিমু কেমনে, আর ৬০০ টেহার সারের দামতো এর মধ্যেই ১০০০ টাকা অইছে। এত টেহা আমরা কই পাম্ ু। এসব নিয়ে আলাপচারিতার মাঝে কয়েকজন কৃষকের চোখদিয়ে পানি ঝড়তে দেখাযায় এবং তাদেও চোখে-মুখে ফুটেউঠে হতাশার চিহ্ন।
এ ব্যপারে মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ছাইফুল আলম বলেন, আমন ফসল রক্ষার জন্য আমরা সবরকম চেষ্টা করছি। কৃষক জমিতে পানি দিতে পাড়লে এত সমস্যা হতো না। তবে কৃষকের যে জমি একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে সে জমি ভেঙ্গে শরিষা আবাদের পরামর্শ দিয়েছি। আর আমন ক্ষেতের বর্তমান যে অবস্থা তাতে করে আমনের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়া সম্ভব না।