সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী,কুমিল্লাঃ
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে বিএনপি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বাতিল ও সেনা মোতায়েনের দাবীতে নির্বাচন বয়কটের সির্দ্ধান্তে অনড় থাকলেও জেলা বিএনপি’র যুগ্ন সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র মনিরুল হক সাক্কু মাঠে তৎপর। এদিকে আ’লীগ থেকে বারবার আফজাল খানকে দলীয় সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিতের কথা বললেও দলীয় একাধিক প্রার্থী এখনো মাঠে থাকায় বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে রয়েছেন তিনি। দু’দলের কেউ যখন নিশ্চিত হতে পারছে না একক প্রার্থীপদের তখন মাঠে নীরবে নির্বাচনী তৎপরতা চালাচ্ছেন জামায়াত ইসলামী’র প্রার্থী কাজী দ্বীন মোহাম্মদ ও জাতীয় পার্টির এয়ার আহমেদ সেলিম। তবে মাঠ জরিপে এ মুহুর্তে ওই দু’প্রার্থীর বাইরে অন্য কেউ নেই সুবিধা জনক প্রচারনায়। আগামী ২৯ নভেম্বর ঢাকায় কুমিল্লা উত্তর ও কুমিল্লা দক্ষিন রাজনৈতিক জেলার সংসদ সদস্য ও নেতৃবৃন্দ ঢাকায় বসে সির্দ্ধান্ত নিবেন কে হচ্ছেন আ’লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী। দায়িত্বশীল নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র দাবী করে জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ আফজাল খানকে ইতিমধ্যে প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। যে কোন দিন তা ঘোষিত হতে পারে। তবে স্বস্তিতে নেই আফজাল খান। বর্তমানে জেলা আ’লীগের ক্ষত বিশাল। একেকজন একেক মতের অনুসারী। নির্বাচনকে সামনে রেখে এতদিন হাফডজন আ’লীগপার্থীর নাম শোনা গেলেও এখন তা ৪জনে নেমে এসেছে। সদর আসনের এমপি’র সুনজরেও আফজাল খান নেই বলে সূত্র দাবী করে। অর্থাৎ দলের পছন্দের তালিকায় অধ্যক্ষ আফজাল খান থাকলেও এ মুহুর্তে তার প্রতিপক্ষ আ’লীগ ব্যানারে ৪জন। তাদের সাথে সদর আসনের সংসদ সদস্যের নামছাড়াও আরো ৩জন এমপি’র নাম শোনা যাচ্ছে। এজন্য দলের মনোনয়নের ক্ষেত্রে সুবিধা জনক অবস্থায় থেকেও স্বস্তিতে নেই তিনি। আর এ অবস্থায় জটিলতা নিরশন না করে সবাই একযোগে একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করা পর্যন্ত আফজাল খান নির্বাচনে নিজেকে নিরাপদ ভাবতে পারছে না। জানা যায়, আ’লীগের মনোনয়ন পেতে বর্তমানে মাঠে রয়েছেন অধ্যক্ষ আফজাল খান ছাড়াও সদর আসনের এমপি আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগ সহ সভাপতি আলহাজ্ব ওমর ফারুক, তরুন আ’লীগ নেতা নুর-উর রহমান মাহমুদ তানিম ও এডভোকেট আনিছুর রহমান মিঠু। সদর আসনের এমপি’র বাইরে দু’জন প্রার্থীর পক্ষে আ.হ.ম লোটাস কামাল এমপি এবং হুইপ মুজিবুল হক মুজিবের প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে। ফলে দল থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলেও মাঠে তিনি কতটা সফল হবেন তা নিয়ে চিন্তিত। এব্যাপারে অধ্যক্ষ আফজাল খান বলেন। দল আমাকেই মনোনয়ন দিবে এবং আমার বিশ্বাস সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমার জন্য কাজ করবে। অন্য দিকে বিএনপি’র ইভিএম প্রথা বাতিল ও সেনা মোতায়েনের দাবীতে ইয়াছিন নির্বাচনী প্রচারনা থেকে সরে দাড়ালেও অপর প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু বসে নেই। বর্তমানে জেলা বিএনপি’র এই দু’টি গ্র“পের সম্পর্ক সাপে নেউলে। দু’পক্ষই দু’পক্ষকে ঠেকাতে মরিয়া। এ অবস্থায় নির্বাচনে নাগরিক ফোরামের ব্যানার থেকে অংশ নেয়ার সম্ভাবনা মনিরুল হক সাক্কু’র থাকলেও তার বিরোধীতায় ইয়াছিন পন্থিরা সোচ্চার। ফলে শান্তিতে নেই সাক্কু গ্র“প। সর্বশেষ গতকাল নগরীতে আলোচনার বিষয় ছিল সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরীকে ইয়াছিন পন্থীদের সমর্থন। ফলে বিগত সময়ে মনিরুল হক চৌধুরী সাক্কুর পক্ষে কাজ করার বিষয়ে কিছুটা আভাষ থাকলেও গতকালকের ইয়াছিনের ঘোষনায় অনেকটা বেসামাল মনিরুল হক সাক্কু। তিনি বলেন, স্থানীয় নেতাকর্মীদের চাপের মাঝে আছি। যেহেতু এটা স্থানীয় সংসদ নির্বাচন সেহেতু ভাবছি দলের সির্দ্ধান্তের বাইরে নির্বাচন করতে পারি কিনা। আ’লীগ ও বিএনপি’র প্রার্থীদের যখন এই অবস্থা তখন মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী এয়ার আহমেদ সেলিম ও জামায়াত প্রার্থী কাজী দ্বীন মোহাম্মদ। তবে সাংগঠনিক অবস্থা এদু’জনের কারোরই মজবুত না।
দু’ট্রাক বিলবোর্ড ব্যানার উদ্ধার
নির্বাচন কমিশনের সহকারী রিটানিং অফিসারদের ৯টি ভ্রাম্যমান দল গতকাল দিনভর নগরীতে অভিযান চালিয়ে ২ট্রাক ভর্তি বিভিন্ন রাজনৈতীক নেতার বিলবোর্ড,ব্যানার উদ্ধার করেছে। কুমিল্লা জেলা নির্বাচন রিটানিং অফিসার মোঃ আব্দুল বাতেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।