আরিফুল ইসলাম সুমন ॥
সীমান্ত পথ অতিক্রম করে অবাধে আসছে ভারতীয় মাদক। গত এক সপ্তাহে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ সদস্যদের হাতে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় গাঁজার চালান আটক হয়। মাদকের এই বিশাল চালান পুলিশ আটক করলেও পাচারকারী কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে জনেমনে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ টাকার বিনিময়ে মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ছেড়ে দিয়েছে। এমনকি আটককৃত মাদকের চালান থেকে বেশকিছু পরিমাণের মাদক সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে এসব অভিযোগ পুলিশ অস্বীকার করেন।
সরাইল থানা পুলিশ ও একাধিকসূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইল পশ্চিম কুট্টাপাড়া এলাকা থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা মূল্যের ৫৭ কেজি ভারতীয় গাঁজা আটক করে হাইওয়ে পুলিশ। পুলিশ আটক মাদকগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখালেও স্থানীয় লোকজন বলছেন ভিন্ন কথা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোপান সিএনজি ফিলিং-এর আশপাশের একাধিক ব্যক্তি জানান, বৃহস্পতিবার সকালে গাঁজা ভর্তি বস্তাগুলো গাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ। দু’জন ব্যক্তিকে প্রথমে আটক করলেও, পরে অদৃশ্য কারণে ঘটনাস্থলেই পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়। এ ব্যাপারে বিশ্বরোড মোড় হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সার্জেন্ট মো. নূর হাইদার তালুকদার জানান, বস্তা ভর্তি গাঁজাগুলো এস আই আকরাম আটক করে। এগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল বলে তিনি সবাইকে জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সরাইল থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়। এ বিষয়ে এস আই আকরাম জানান, স্থানীয় কেউ খবর দেয়নি। আমারা (পুলিশ) নিজেরাই খোঁজ করে গাঁজার বস্তাগুলো পেয়েছি।
এদিকে ২১ নভেম্বর দুপুরে মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়ে মাদক বহনকারী নৌকাসহ একশ’ কেজি (৪ বস্তা) ভারতীয় গাঁজা আটক করে অরুয়াইল ফাঁড়ির পুলিশ। অরুয়াইল বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ওই দিন নদী থেকে পুলিশ পাঁচ বস্তা ভর্তি গাঁজার সাথে বেশকিছু ফেনসিডিলের বোতলও এনেছিল। বিশাল মাদকের চালান ও বহনকারী নৌকা পুলিশের হাতে আটক হয়। কিন্তু কেউ গ্রেফতার হয়নি। বিষয়টি রহস্যজনক বলে অনেকে মন্তব্য করেন। অরুয়াইল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই বেলাল জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নদীতে অভিযান চালিয়ে বস্তা ভর্তি শুধু একশ’ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। নৌকায় আর কোনো মাদক ছিল না। মাদক বহনকারী নৌকাটি আটকের পর মামলা হয়েছে। আসামিরা পলাতক রয়েছে।