মোঃ ফখরুল ইসলাম সাগর,দেবিদ্বার(কুমিল্লা)সংবাদদাতা :
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বুধবার বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দেবিদ্বার আলহাজ্ব জোবেদা খাতুন মহিলা বিশ্বদ্যিালয় কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোঃ সেলিম ভূঞা’র উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে একই দিন দুপুরে নিউমার্কেট চত্তরে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা হামলাকারীদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ, মানব বন্ধন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট স্মারক লিপি প্রদান করেছে বীদ্বার পৌর এলাকার ছোট আলমপুর ও দেবীদ্বার উত্তর পাড়ার মধ্যে দফায় দফায় হামলা, দোকান পাট ভাংচুর, লুটপাট এবং সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত ‘কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক’ অবরোধ করে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ২০০৯সালে দেবিদ্বার এস এ সরকারী কলেজে বিএনসিসি’র প্রশিক্ষন চলাকালে একটি ইভটিজিং’র ঘটনায় একদল বখাটে কর্তৃক প্রশিক্ষন শিবিরে সন্ত্রাসী হামলা, একজন মেজরকে লাঞ্ছিত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দায়েরকৃত মামলার দু’আসামী মাহফুজ ও ফারুকের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। মাহফুজ সন্দেহ করেছিল ফারুক তাকে আসামী করেছে। এনিয়ে ফারুকের উপর একাধিকবার হামলা করে মাহফুজ ও তার সঙ্গীরা। এনিয়ে স্থানীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে তাদের মিলিয়ে দেয়া হয়।
গত বুধবার মাহফুজ ¯œাতক প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিতে দেবিদ্বার আলহাজ্ব জোবেদা খাতুন মহিলা বিশ্বদ্যিালয় কলেজ কেন্দ্রে আসার সময় ফারুকের পক্ষ তার উপর হামলা করে, পরে সে কলেজ কেন্দ্রে ঢুকে আত্মরক্ষা করে। পরীক্ষা শেষে তার উপর হামলার আশংকায় ছোট আলমপুর তার সঙ্গীদের খবর দেয়। পরীক্ষা শেষে মহিলা কলেজের সামনেই উভয় পক্ষের বাগবিতন্ডার এক পর্যায়ে ¯œাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কুমিল্লা উত্তর জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন রুবেল তাদের শান্ত থাকার আহবান জানালে মাহফুজের সমর্থকরা রুবেলকে চাপাতি দিয়ে এলোপাথারী কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে, এসময় ফারুককেও একই কায়দায় আহত করা হয়। অপরদিকে মাহফুজের ৩সমর্থককেও মারাত্মক আহত করা হয়। এদের সবাইকে কুমেক এবং ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ছাত্রলীগ সমর্থকরা সন্ধ্যা ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ‘কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক’ অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। কুমিল্লা থেকে আসা অতিরিক্ত পুলিশ এবং দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হারুন অর রশীদ’র হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনলেও রাতভর উৎকন্ঠা এবং আতঙ্কে ছিল দেবিদ্বার পৌরবাসী। ওই ঘটনায় বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেবীদ্বার নিউমার্কেট এলাকার কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
এব্যপারে কুমিল্লা-৪(দেবিদ্বার) নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য, সরকারী প্রতিষ্ঠান সম্পর্কীত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম গোলাম মোস্তফা বৃহস্পতিবার বিকেলে সেল ফোনে প্রথম আলোকে জানান, দেবিদ্বারের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি জটিল করতে বিএনপি’র ইন্দন রয়েছে। ছাত্রলীগ নেতা ইকবাল হোসেন রুবেলসহ ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতাদের উপর হামলা এবং জোবেদা খাতুন মহিলা কলেজ অধ্যাপক সেলিম ভূঞার উপর হামলা, দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাটকারীদের গ্রেফতার পূর্বক শাস্তি প্রদানে পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি। যদিও পুলিশ প্রশাসনের দূর্বল ভূমিকার কথাও শোনেছি।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাজী মোহাম্মদ ফখরুল জানান, অনাকাঙ্খীত ঘটনাটি নিছক ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকে ঘটলেও কেউ কেউ এটিকে রাজনৈতিক প্রবাকান্ডে চালানোর চেষ্টা করছে।
দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হারুন অর রশীদ বলেন, একের পর এক অনাকাঙ্খীত ঘটনা দেবিদ্বারকে সংকীত করে তুলছে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগীতা ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।
বিকেলে এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি তদন্ত) মিজানুর রহমান জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় কোন পক্ষই মামলা করতে আসেনি, কাউকে গ্রেফতার করাও সমম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আছে। উপজেলা সদরের বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কেউ মামলা না করলেও গোয়েন্দাদের সূত্র ধরে অপরাধীদের চিহ্নীত করে গ্রেফতার অভিযান চালানো হবে।