ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভোট কারচুপি ও কেন্দ্র দখলের ঘটনায় বিএনপির ডাকা হরতালের পক্ষে বিপক্ষে মিছিল সমাবেশ

লিটন চৌধুরী, ২৮ জানুয়ারি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥

২৭ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি, কেন্দ্র দখল, ছিনতাইয়ের ঘটনায় আগামী রবিবার বিএনপি ডাকা হরতালের পক্ষে মিছিল ও সমাবেশ করে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ হরতালের বিপক্ষে মিছিল করে। এ সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

রবিবারের ডাকা হরতালের পক্ষে গতকাল শুক্রবার বিকেলে জেলা বিএনপি জেলা পরিষদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আধুনিক সুপার মার্কেটের সামনে সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগসহ উপ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় নির্বাচনের দাবী জানান। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন বলেন, উপ নির্বাচনে সেনাবাহিনী দেয়ার ঘোষণা দিলেও পরবর্তীতে সরকারি দলের সঙ্গে আতাত করে সেনাবাহিনী ছাড়া নির্বাচন করে। সেনাবাহিনী না থাকায় আওয়ামী লীগ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় কেন্দ্র দখল করে ও ভোট কারচুপি করে বিএনপির নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেয়। কেন্দ্র দখল ও কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়ার ঘটনা মিডিয়া ক্যামেরা বন্দী করতে চাইলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকদের উপর হামলা চালায়। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চুপ দায়িত্বে ছিল। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোন নির্বাচনে সাংবাদিকদের উপর হামলা চালানোর ঘটনা ঘটে নাই।

এ সব ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার বিএনপি রবিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করে। হরতাল সফল করতে জেলা বিএনপি মিছিল বের করলে ব্যাটালিয়ন পুলিশ ও দাঙ্গা পুলিশ মিছিলটি চারিদিক থেকে ঘিরে রাখে। পুলিশ বেষ্টনীতে সমাবেশ করার সময় আওয়ামী লীগ হরতাল বিরোধী মিছিল বের করে। মিছিলটি মৌড়াইল থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পাইকপাড়া প্রধান নির্বাচনী ক্যাম্পে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় সারা শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। আতংকগ্রস্থ হয়ে লোকজন এদিক সেদিক ছুটাছুটি শুরু করে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে উপ নির্বাচনের বিএনপির প্রার্থী খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামলসহ বিএনপির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ হাসপাতালে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্তৃক আহত স্থানীয় দৈনিক কুরুলিয়ার সম্পাদক ইব্রাহীম খান সাদাত ও ছাত্রদলের এক নেতাকে দেখতে হাসপাতালে খান। এসময় ইব্রাহীম খান সাদাতের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন।

অন্যদিকে গতকাল আওয়ামী লীগের বিজয়ী প্রার্থী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী পাইকপাড়া নির্বাচনী ক্যাম্পে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় করে সকলের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান। বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিক আহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর শহরের বিভিন্ন এলাকায় গুলি ও বোমার শব্দে শহরবাসী আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়ে। তবে কোন প্রকার হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

হরতালকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতাকর্মীদের আটক করতে অভিযান চালাবে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। হরতালকে কেন্দ্র করে শহরে বড় রকমের সংঘাতের আশংকা করা হচ্ছে। শহরের প্রধান প্রধান সড়কে ব্যাটালিয়ন পুলিশ, দাঙ্গা পুলিশ ও থানা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোন প্রকার ভাংচুর ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Check Also

আশুগঞ্জে সাজাপ্রাপ্ত আসামির মরদেহ উদ্ধার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি :– ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মো. হারুন মিয়া (৪৫) নামে দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত এক আসামির ...

Leave a Reply