জাতীয় ফুল শাপলা

এস এম নাজমুল হক ইমন :

বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা। খাল-বিল ও আবদ্ধ জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ার কারনে শুধু নওগাঁ কিংবা বগুড়া জেলাতেই নয়, উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রমান্বয়ে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে জাতীয় ফুল শাপলা। সংরক্ষনের উদ্যোগ নেই। নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার প্রবীণ ব্যক্তিত্ব শিক্ষাবিদ ও ভাষা সৈনিক নুর আলম খাদেমুল ইসলাম বলেন, জাতীয় ফুল শাপলা সাধারণত আবদ্ধ অগভীর জলাশয় খাল-বিল অঞ্চলে জন্মে থাকে। এ জেলায় দুই ধরনের শাপলা ফুল দেখতে পাওয়া যায়। একটি সাদা ও অপরটি লাল। স্থানীয় ভাষায় সাদা শাপলাকে সদা হলা ও লাল শাপলাকে লাল বা রক্ত হলা বলা হয়ে থাকে। এ শাপলা ফুল যখন আবদ্ধ জলাশয়ে অনেকগুলো ফুটে থাকে তখন ওই জলাশয়ে এক অপরূপ সৌন্দর্যের সৃষ্টি হয়। আর ফুল থেকে যে অংশ ফলে রূপান্তরিত হয় তাকে স্থানীয় ভাষায় ভ্যাট বলা হয়ে থাকে। এ ভ্যাটের ভিতরে অনেক ছোট বীজ থাকে। এগুলো মানুষ উঠিয়ে নিয়ে ভেঙ্গে শুকিয়ে খই ভেজে খেয়ে থাকে। এ খই খুবই সুস্বাদু হয়ে থাকে। এ শাপলা বর্ষাকালে ক্রমান্বয়ে জন্মে ও ফুল ফুটে থাকে। এছাড়া বগুড়ার সান্তাহার শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ এস এম শফি উদ্দিন বলেন, আমার গ্রামের বাড়ী বিল এলাকায় (বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার রক্তদহ বিলে তার গ্রামের বাড়ি) তাই আমি দেখেছি এই শাপলা ফুল বিলে অনেক হতো কিন্তু আজ কালের পরিবর্তনে আর আবহাওয়ার পরিবর্তনে আজ তা প্রায় বিলুপ্ত। আজ থেকে মাত্র ২০/২৫ বছর পর আমাদের দেশের জাতীয় ফুল শাপলা হবে শুধু টেলিভিশন আর বইয়ের ছবিই। ভবিষ্যৎ প্রজম্ম শুধু জানবেই আমাদের দেশে শাপলা নামের একটি ফুল ছিলো আর তা আমাদের দেশের জাতীয় ফুল। তবে সরকারের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় আর সংরক্ষনে এই ফুলকে সংরক্ষন করা সম্ভব আর সেজন্য সরকারকে এই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
জাতীয় ফুল শাপলা ক্রমান্বেয়ে হারিয়ে যাওয়ার অনুসন্ধানে জানা গেছে, জাতীয় শাপলা ফুল অগভীর আবদ্ধ জলাশয়ের খাল-বিলে জন্মে থাকে। বিশেষ করে বিল অঞ্চলেই বেশি জন্মে থাকে। এ খাল-বিল ও আবদ্ধ জলাশয়গুলো সরকারি অথবা ব্যক্তি উদ্যোগে শুকিয়ে ফেলে সেখানে ইরি বোরো, সরিষা, আলু, গমসহ বিভিন্ন রবিশস্য চাষ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও আবদ্ধ জলাশয়গুলোতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার ফলে শাপলা জন্মানোর ক্ষেত্রগুলো চোখে পড়ে না বললেই চলে।
নবীন-প্রবীণদের অনেকেই অভিমতে জাতীয় ফুল শাপলা এক সময় হয়ত কাগজে কলমে পাঠ্য বই পত্রেই লেখা থাকবে। দ্রুত বিলুপ্তির কারনে বাস্তবে আর হয়তো পাওয়া যাবে না। শাপলা ফুলকে রক্ষা করতে হলে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে আবদ্ধ জলাশয় অথবা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লেকগুলোতে জন্মানোসহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার।

লেখক- ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও ফিচার
সান্তাহার, বগুড়া

Check Also

মিনি ওয়াক-ইন-সেন্টারের মাধ্যমে রবি’র গ্রাহক সেবা সম্প্রসারণ

ঢাকা :– গ্রাহক সেবাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে মোবাইলফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেড সম্প্রতি মিনি ওয়াক ...

Leave a Reply