
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কুড়ের পাড় আদর্শ কলেজে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে আমন্ত্রন না করায় অভিভাবক সমাবেশে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হামলা চালিয়ে অনুষ্ঠান পন্ড করে দেয়া হয়েছে। হামলাকারীরা অনুষ্ঠানের পেন্ডেল, টেইজ, চেয়ার, টেবিল ও কলেজের অফিস কক্ষ ভাংচুর চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। উক্ত ঘটনার প্রতিবাদে কলেজের শিক্ষার্থী ও এলাকার বিক্ষুব্দ জনতা কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়ক ২ ঘন্টা অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে হামলাকারীরা পূনরায় এসে পুলিশের সামনেই শিক্ষার্থী ও এলাকার লোকজনের উপর হামলা চালায় এবং ২টি দোকান ভাংচুর করে। এতে কলেজের অধ্যাপক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ ২০ জন আহত হয়। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা যায়, শুক্রবার সকাল ১০ টায় ছিল আকবপুর ইউনিয়নের কুড়ের পাড় আদর্শ কলেজের অভিভাবক প্রতিনিধি সমাবেশ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল এফ,বি,সি,সি,আই’র সাবেক সভাপতি ও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব ইউছুফ আব্দুল্লাহ হারুন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএনপি ও আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে আমন্ত্রন করা হয়। এতে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে আমন্ত্রন না করায় বিষয়টি তিনি মেনে নিতে পারেননি। ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি তার পেটুয়া বাহিনী ও আওয়ামীলীগ নেতা মুকলিশপুর গ্রামের আব্দুল হাকিম মাস্টারকে ব্যাবহার করেন। ফলে আব্দুল হাকিম মাস্টার তার সাথে ওসি আমিরুল আলমকে নিয়ে এ ঘটনা ঘটায়। বর্তমানে ইউছুফ আব্দুল্লাহ হারুনের নাম-নিশানা মুছে ফেলার জন্য নতুন করে চক্রান্তে মেতে উঠেছে বলে জানা গেছে। এমনকি সুনাম অর্জনকারী এ প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করার জন্য নিরপরাধ কলেজ ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষক মন্ডলী ও ছাত্রদের নামে মিথ্যা মামলা করারও পায়তাঁরা চলছে বলে বিস্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। ফলে এলাকায় বিরুপ প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি সর্বমহলে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে। এ ঘটনায় কলেজের সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রশীদ (৪৮), সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নায়েব আলী (৭৫), অভিভাবক হাজী ফরিদ উদ্দিন (৭০), প্রবাসী সেলিম মিয়া (৫০), মুসলেহ উদ্দিন ভুইয়া (৪০) ও কলেজ ছাত্রী সোনিয়া (১৭) সহ ২০ জন আহত হয়।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও এফ,বি,সি,সি,আই’র সাবেক সভাপতি ইউছুফ আব্দুল্লাহ হারুন জানান, এ ধরনের একটি অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান সন্ত্রাসী কর্তৃক পন্ড করে দেয়ায় আমি মর্মাহত। অনুষ্ঠানে না আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নেত্রীর নির্দেশে মেয়র নির্বাচনের ব্যাপারে চট্রগ্রামে ব্যাস্ত রয়েছি। কলেজ কর্তৃপক্ষকে বলে দেয়া হয়েছে-অন্যান্যদের নিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করতে। কিন্তু দু:খের বিষয় যে, সকাল থেকে মুরাদনগরের বিভিন্ন লোকজন ও কলেজ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জানতে পারলাম, আব্দুল হাকিম মাস্টারের নেতৃত্বে কিছু লোকজন অনুষ্ঠানটিকে পন্ড করে দেয়। শুনেছি পুলিশের ভূমিকাও ছিল রহস্যজনক। তিনি গভীর আপে প্রকাশ করে বলেন, এ ভাবে আর কতদিন চলবে? মুরাদনগরকে সন্ত্রাস ও চাদাঁবাজ মুক্ত করতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
অপর দিকে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার জানান, আমিতো কলেজের কেউ না, আমাকে দাওয়াত দেবে কেন। বিষয়টির ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।


এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আওয়ামীলীগ নেতা মুকলিশপুর গ্রামের আব্দুল হাকিম মাস্টার বিষয়টি অস্বীকার করেন।