
প্রশাসনের বেশ কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত আর হাজার হাজার ভর্তিচ্ছুর অন্তহীন দূর্ভোগের মধ্য দিয়ে গতকাল শুক্রবার সম্পন্ন হলো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেনীর ১ম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা । সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ৩ দফায় ভর্তি পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ৬টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হয়। ৪টি ফ্যাকাল্টির ১১টি বিভাগে ৫২০ আসনের জন্য এই ভর্তিযুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়। ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বিভিন্ন ভুল থাকার অভিযোগ করে পরীক্ষার্থীরা। কোন পূর্বঘোষণা ছাড়া হঠাৎ করে প্রশ্নপত্রে নেগেটিভ মার্কিংয়ের নিয়ম উল্লেখ করায় বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় ভর্তিযোদ্ধারা। প্রথমবারের মত শহরের বাইরে ক্যাম্পাস এলাকায় ভর্তি পরীক্ষা হওয়ায় মারাত্মক যানবাহন সংকট, যানজটসহ নানা ভোগান্তির শিকার হয় দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। বিগত সকল ভর্তি পরীক্ষায় চলে আসলেও এবার পরীক্ষার হলসমূহ সাংবাদিকদের পরিদর্শন করতে না দেয়ায় বিভিন্ন প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। এদিকে এবারই প্রথমবারের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে এবং মোবাইলের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল জানা যাবে।
সরেজমিন পরিদর্শন, পরীক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন অনুষদের প্রশ্নপত্রে কয়েকটি প্রশ্নের একাধিক উত্তর এবং কয়েকটি প্রশ্নের কোন সঠিক উত্তরই না থাকায় বিপাকে পড়তে হয় পরীক্ষার্থীদের। প্রথম থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার মূল্যায়নে নেগেটিভ মার্কিং চালু না থাকলেও এবারের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে নেগেটিভ মার্কিংয়ের উল্লেখ করা হয়। ভর্তি নির্দেশিকায় এ ধরনের কোন তথ্য না থাকায় হঠাৎ করে পরীক্ষার হলে এসে এই ঘোষণায় হতাশায় পড়ে পরীক্ষার্থীরা। প্রশ্নপত্রে এ নির্দেশকা দেখে একাধিক শিক্ষার্থী ক্ষোভের সাথে জানায়, প্রশ্নপত্রে এত ভুল থাকলে কিভাবে পরীক্ষা দেব। আরেক শিক্ষার্থী জানায়, কর্তৃপক্ষ কোন সিদ্ধান্ত নিলে তা আগে জানানো উচিত ছিল। এছাড়া এ সকল ভুল-ভ্রান্তি ঢাকতে প্রশ্নপত্রও বাইরে আনতে দেয়া হয় নি পরীক্ষার্থীদের। একদিকে মারাত্মক যানবাহন সংকট অন্যদিকে তীব্র যানজটের কারনে অনেক পরীক্ষার্থী যথাসময়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে পারে নি। সকালবেলা সিএনজিসহ পর্যাপ্ত যানবাহনের অভাবে কান্দিরপাড় রামঘাটলা, টমছমব্রীজ, দৌলতপুর চৌমুহনী, ক্যান্টনমেন্ট, পদুয়ার বাজার ও কোটবাড়ি বিশ্বরোডসহ বিভিন্ন স্থানে দূর্ভোগের শিকার হয় পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর যানবাহনে চড়তে সক্ষম হয় তারা। পরবর্তীতে দুই ইউনিটের পরীক্ষার পর মাত্র এক ঘন্টা ব্যবধানে কম্বাইন্ড ইউনিটের পরীক্ষা থাকায় যানজটে আটকে অনেক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা আরম্ভ হওয়ার পর কেন্দ্রে পৌঁছে। কয়েকজন পরীক্ষায় অংশ নিতেই ব্যর্থ হয় বলে জানা যায়। পরীক্ষা শেষে যানবাহনের অপেক্ষায় ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অনেককে, কেউ কেউ ৮-৯ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে শহরে পৌঁছেন। এ সময় ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে বিশ্বরোড পর্যন্ত পুরো কোটবাড়ি এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। একদিকে জাদুঘর ও শারবন বিহার এলাকায় পিকনিক এবং শিক্ষা সফরকে কেন্দ্র করে ব্যাপক লোক সমাগম, অন্যদিকে ভর্তি পরীক্ষা মিলিয়ে মারাত্মক যানজটের সৃিষ্ট হয়।

