স্টাফ রিপোর্টার :
আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমা, দুপুর সোয়া ১২টায় আখেরি মোনাজাত শুরু হয়। বিশ্ব তাবলিগ জামাতের সর্বোচ্চ পরিষদ আমলি শুরার সদস্য ভারতের মাওলানা জুবায়রুল হাসান মোনাজাত পরিচালনা করেন। মোনাজাতে মুসল্লিদের জানা-অজানা সব গুনাহ থেকে মাফ করার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা জানানো হয়। অনেক মুসল্লি এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন। মোনাজাতের সময় ইজতেমা ময়দানের আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা প্রায় ২৫ মিনিট ‘আমিন’ ‘আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত ছিল।
আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে ভোর থেকেই রাজধানী ও আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে লাখ লাখ মানুষের স্রোত এগিয়ে চলে ইজতেমা ময়দানের দিকে। সকাল ১০টার মধ্যেই মুসল্লিদের ভিড় ইজতেমা ময়দান ছাপিয়ে আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।দুপুর ১২টা ৪১ মিনিটে মোনাজাত শেষ হওয়ার পর লাখ লাখ মানুষের এই মিলনমেলা ভাঙে। একে একে তাঁরা নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হওয়ার প্রস্তুতি নিতে থাকেন।
মোনাজাতে যা বলা হলো: মাওলানা জুবায়রুল তাঁর মোনাজাতে মুসলমান ও সারা বিশ্বের শান্তি ও উন্নতির জন্য দোয়া করেন। সবার দুঃখ-কষ্ট দূর করে দিয়ে ইসলামের সঠিকপথে ফিরে আসার হেদায়েত করতে তিনি আল্লাহর কাছে কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ, তোমার অজানায় কিছু হচ্ছে না, তুমি সবই জান ও বোঝ, তুমি আমাদের সবার দোয়া কবুল করো।…আমাদের সবার গুনাহ মাফ করে দাও, সবাইকে হেদায়েত করো, সবার অন্তরে প্রেম দাও, তোমার উম্মতকে সঠিক পথে নিয়ে আসো, পুরো মানবজাতির ওপর শান্তি বর্ষিত করো, আমাদের ইমানকে মজবুত করো, আমাদের সব পেরেশানি দূর করে দাও।’
ইজতেমা ময়দানে নারীদের বসার ব্যবস্থা না থাকলেও আশপাশের সড়ক, বিভিন্ন বাড়ি-ঘর ও ছাদে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন বয়সের অনেক নারী মোনাজাতে অংশ নেন। মোনাজাত শুরুর ঘোষণা হওয়ামাত্রই রাজপথ, ফুটপাথ, রাস্তার ডিভাইডারের ওপর, বাড়ির ছাদ ও বারান্দা, গাড়ি, খোলা ট্রাক, রাস্তার ধারের দোকান, দোকানের সামনের এক চিলতে খালি জায়গা—সব জায়গায় লোকজন মোনাজাতে শরিক হন। অনেকে মোবাইল ফোনে তাঁদের নিকটজনদের মোনাজাত শোনান। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো মোনাজাত সরাসরি সম্প্রচার করে। বাড়িতে থাকা নারী-পুরুষেরা এ সময় মোনাজাত ধরেন।
কাল শনিবার রাত থেকেই টঙ্গীর তুরাগ তীরের দিকে ছিল মানুষের স্রোত। চারদিকের সড়ক ধরে অজস্র নারী-পুরুষ, কিশোর, যুবক বা বৃদ্ধ—কেউ যাচ্ছিলেন একা, কেউ বা দল বেঁধে। পরের দিন আজ রোববার সকালে মানুষের এই স্রোত বেড়েছে কয়েক গুণ।একসময় তুরাগ তীরের ১৬০ একরের ইজতেমা ময়দান ছাপিয়ে মানুষের জমায়েত আশপাশের কয়েক কিলোমিটার সড়ক ছাড়িয়ে
বাংলাদেশের মুসলমানদের কাছে বিশ্ব ইজতেমার আবেদন অনন্য। প্রতিবছরের ধারাবাহিকতায় তাই এবারও লাখ লাখ মানুষ এসে জড়ো হয়েছিলেন ইজতেমা ময়দানে।
রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও ইসলামী রাষ্ট্রের কুটনীতিকেরা আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।
ইজতেমার নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত র্যাব-পুলিশের সদস্যরাও মোনাজাতে অংশ নেন।
সেনাবাহিনী ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন রাজধানী থেকে ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের জন্য সরবরাহ করে বিশুদ্ধ খাবার পানি।
Check Also
করোনাযুদ্ধে প্রথম জীবন উৎসর্গকারী কনস্টেবল জসিমকে বুড়িচংয়ে সমাহিত
বুড়িচং প্রতিনিধিঃ করোনাযুদ্ধে পুলিশে প্রথম জীবন উৎসর্গকারী কনস্টেবল জসিম উদ্দিনকে (৩৯) কুমিল্লায় সমাহিত করা হয়েছে। ...